জামালপুর জেলার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী খাবার মিল্লিভাত বা পিঠালী। এ খাবার তৈরিতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় গরু, খাসি অথবা মহিষের মাংস, চালের গুঁড়া, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, জিরাসহ নানা প্রকার মসলা। এ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে কুলখানীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয় এ খাবারটির। মুখরোচক এ খাবারটি জামালপুরবাসীর কাছে খুবই পরিচিত হলেও রাজধানীতে বসবাস করা এ জেলার বাসিন্দারা এর স্বাদ খুবই কম নিতে পারে। তাই ঢাকাস্থ হাজার হাজার জামালপুরবাসীদের মাঝে এ খাবারের স্বাদ বিলিয়ে দিতে আয়োজিত হল মিল্লিভাতের মিলনমেলা ২০২৪।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর মুহাম্মদপুরে সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে ঢাকাস্থ জামালপুর জেলার সর্বস্তরের মানুষের এ মিলন মেলা সম্পন্ন হয়। আয়োজক কমিটির সভাপতি ছিলেন মো. নাজমুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মো. ফেরদৌস আলম। মিল্লিভাতের এ আয়োজনে যোগ দিয়েছিলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেছ আলী মামুন।
আয়োজকরা জানান, ঢাকাস্থ জামালপুর জেলার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করার একটি আয়োজন ঐতিহ্যবাহী মিল্লিভাত/মিলানি/পিঠালী। অনেক আগে থেকেই আমাদের জেলায় সকল পেশার মানুষের একত্রিত যে কোনো অনুষ্ঠানগুলোতে এই ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন করে থাকে। আমরা জামালপুরবাসী আমাদের এই ঐতিহ্যবাহী খাবারের সৌজন্যে আজও আমরা সামাজিক সম্পর্ককে অক্ষুন্ন রেখে একটা সুস্থ্য, সুন্দর সামাজিক ব্যবস্থার মধ্যে বসবাস করতে পারছি যা সারাদেশের জন্য হতে পারে একট উদাহরণ।
মিন্নিভাতের এ আয়োজনে অংশ নিয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, এটি জামালপুরবাসীর একটি ঐতিহ্যবাহী আয়োজন। আমরা যুগ যুগ ধরে মিল্লিভাত বা পিঠালিভাতের সাথে পরিচিত। আমাদের জেলার নানান অনুষ্ঠান আয়োজনে এ আয়োজন করে থাকি। ঢাকাস্থ জামালপুরের নানা শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ বসবাস করে। নতুন বাংলাদেশে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামের মেজবান যেমন সারা দেশে পরিচিত, আমরা আশা করি জামালপুরের মিল্লিভাতের স্বাদ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। আমরা সারা দেশে আমরাদের খাবারটি তুলে ধরতে চাই।
আয়োজক কমিটির সহ সভাপতি সাজিদ হাসান বাবু বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের মিল্লিভাতের আয়োজন আজকে মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ঢাকায় জামালপুরের অনেক লোকজন থাকলেও তাদের সঙ্গে দেখা হয় না। আজকের আয়োজনের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হচ্ছে। আগামীতেও আমরা এমন আয়োজন নিয়মিত করবো।
দিনব্যাপী এ আয়োজনে খাবার খাওয়া ছাড়াও শিশুদের খেলা, লটারি ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ঢাকাস্থ জামালপুর জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন।