প্রায় সাড়ে ৩ লাখ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবার একমাত্র নির্ভরযোগ্য নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তবে কয়েক লাখ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে এই হাসপাতালে ডাক্তার মাত্র রয়েছে দুইজন। হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।
এদিকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকট থাকায় হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিছন্নতা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে রোগীর স্বজন ও স্থানীয়দের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সেবা নিতে এসেছে রোগীরা। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের কারণে পাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা। হাসপাতালে আসার পরে জরুরী বিভাগে একজন চিকিৎসকের কাছে সেবা নিয়ে ওয়ার্ডে গিয়ে চিকিৎসক ও নার্স সংকটের কারণে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে নিতে হচ্ছে চিকিৎসা। এসময়ে অনেক জরুরী রোগীকে চিকিৎসক সংকটের কারণে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করছেন৷
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১ সালে ৩৫ শয্যা থেকে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। খাতা কলমে ৫০ শয্যা হলেও এখানে চালু হয়নি বাকি ১৫টি বেড। ভবন থাকলেও জনবল সংকট ও বরাদ্দ না পাওয়ায় অব্যবহৃত পড়ে আছে সেটি। ৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে সেখানে ৩৩ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ২ জন ও হাসপাতালে ১০ জন কনসালটেন্টের পদেও আছেন মাত্র ২ জন। এছাড়াও ৬০ শতাংশ শূন্য রয়েছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদ।
চিকিৎসা নিতে আসা রাকিবুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছি এখানে এসে দেখি চিকিৎসক নাই ৷ একজন চিকিৎসক জরুরী বিভাগে ছিলেন। আমি আসা মাত্র তিনি খেতে গেলো। এখন কোলের শিশুকে নিয়ে অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি। অপেক্ষা করছি চিকিৎসক আসলে চিকিৎসা নিব।
মহিলা ওয়ার্ডের আরেক আরেক রোগীর স্বজন মমিনা বেগম বলেন, আমার মেয়ের ডায়রিয়া হয়েছে, গত পরশু দিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি৷ এখানে ঠিকমতো ডাক্তার আসছে না সকালে একজন ডাক্তার ডাক্তার এসে দেখে যায় তারপর সারাদিন আর কেউ আসেনা। একজন নার্স আছে তিনি মাঝেমধ্যে এসে দেখে যায়। আমাদের যখন জরুরী প্রয়োজন হয় তখন ডাক্তার নার্স আসেনা৷
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স মৌসুমি বেগম বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট। এছাড়া কনসালটেন্ট সংকট রয়েছে। আমরা চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। সারাদিন হাসপাতালে ভিড় লেগেই থাকে আমরা অনেক সময়ে সময়ের বাইরেও গিয়েও কাজ করছি। দ্রুত জনবল নিয়োগ দিয়ে শূন্য পদ পূরণ হলে সাধারণ মানুষ ভালো সেবা পাবেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবু হাসান মো. রেজওয়ানুল কবীর বলেন, এ হাসপাতালে মাত্র দুইজন চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি। চিকিৎসক সংকটের কারণে রোগীরাও সময়মতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না৷ এ হাসপাতালে উপজেলার প্রায় চার লক্ষ মানুষ চিকিৎসা নেয়। শূন্যপদে জনবল চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমাদের চাহিদার কথা জানিয়েছি। জনবল শূন্যপদ পূরণ হলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবার পরিধি বাড়বে।