বিএনপি'র নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানা'র ওসি আব্দুর কাদের ও জেলা গোয়েন্দা(ডিবি) ওসি ফিরোজ হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার(৮ জানুয়ারি) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন লালমনিরহাট পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম।
বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার মোস্তফি এলাকায় একটি কোল্ড স্টোরেজে দাওয়াত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার ও দুই ওসি। ওই দাওয়াতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা আখের ইসলাম। স্থানীয় বিএনপির তিন কর্মী মোবাইল দিয়ে অনুষ্ঠানের ছবি ধারণ করছিলেন। এসময় পুলিশ তাদেরকে আটক করে।
এ খবর বাইরে ছড়িয়ে পড়লে শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মী তাৎক্ষণিক ওই কোল্ড স্টোরেজের সামনে উপস্থিত হন। বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভে পুলিশ আটক তিন ব্যক্তিকে ছেড়ে দেন। পরে বিএনপি নেতা-কর্মীরা পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবিতে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মোস্তফি এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ উপস্থিত হয়ে সড়ক অবরোধকারীদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে বিএনপির অন্তত ২০জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে দুই ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা বিনা কারণেই বিএনপি'র নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করেন। এতে প্রায় ২০জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আওয়ামীলীগ নেতার সাথে বসা পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করেছিলাম। এ কারণেই পুলিশ আমাদের ওপর চড়াও হয়ে লাঠিচার্জ করেছে।
লালমনিরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার বলেন, এ ঘটনায় বুধবার বিকেলে বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রস্তুতি ছিল কিন্তু দুই ওসিকে প্রত্যাহার করায় তা বাতিল করা হয়েছে। অভিযুক্ত দুই ওসির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রত্যাহার হওয়া লালমনিরহাট সদর থানার ওসি আব্দুল কাদের বলেন, এসপি স্যারও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। যারা আমাদের খাওয়া-দাওয়ার ছবি তুলেছিলেন তারা মাদক কারবারি। তাদেরকে আটক করেছিলাম। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা সড়ক অবরোধকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করেছিলাম। কোনো বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করিনি। আওয়ামীলীগ নেতা আখের ইসলামকে আমরা চিনতাম না। কোল্ড স্টোরেজের মালিকের দাওয়াতে আমরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, দায়িত্বের অবহেলার দায়ে আপাতত দুই ওসিকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) ফজলুল হককে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।