স্বপ্নের দোকানের সাথে পুড়ে শেষ হয়েছেন তিনিও

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 23:39:43

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রঙিন স্বপ্ন নিয়ে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থেকে ঢাকায় এসেছিলেন আলি হোসেন। পরিবারের স্বচ্ছলতা আর সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে যুগের পর যুগ একাই সংগ্রাম চালিয়েছেন পুরান ঢাকার চকবাজারে। ভ্যানিটি ব্যাগ বানিয়ে ছোট ছেলেকে নিয়ে বিক্রি করতেন পরিবারের এই কর্তা। একমাত্র সম্বল দোকানটি ঘিরেই ছিল তার স্বপ্ন। সেই স্বপ্নবান মানুষটির স্বপ্ন আজ থেমে গেছে। তার নিথর পোড়া শরীরে এখন আর প্রাণ নেই। স্বপ্নের দোকানের সাথে পুড়ে শেষ হয়ে গেছেন তিনি নিজেও।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আলী হোসেনের দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যাওয়ায় সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন ছোট ছেলে সুজন। বাবার লাশ কাঁধে নেবেন কীভাবে? দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বারবার স্বজনদের কাছে সেই প্রশ্নই করছিলেন সুজন। বিলাপ করছিলেন এই বলে, 'সব শেষ হইয়া গেল! বাবার লাশ নিয়া বাড়ি যাবো ক্যামনে?'

ঢাকা মেডিকেলের মর্গে বাবার লাশ নিতে এসেছিলেন আলি হোসেনের মেয়ে পুষ্পাও। কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। তবে আর্তনাদ থামছে না। চিৎকার দিয়ে বলে উঠছেন, 'আমার বাবা কিছু বলে যেতে পারলো না! আমরা কী নিয়ে বাঁচব? আমাদের কান্না থামাবে কে?'

আলি হোসেনের ছোট ভাই আব্দুর রহিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমার ভাই আগে একাই ব্যাগ বানিয়ে বিক্রি করতে। কিছুদিন আগে ছোট ছেলেকেও নিয়ে এসেছেন। কিন্তু গতকাল রাতে ছেলে বেড়াতে যাওয়ায় বেঁচে গেছে।

তিনি জানান, আলি হোসেন এই ব্যবসা দিয়েই পাঁচ মেয়ে ও তিন ছেলেকে বড় করেছেন। তার স্বপ্নই ছিল এই দোকান। কিন্তু আগুনে সব শেষে হয় গেল! রাতে আমরা অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারিনি। সকালে পুলিশ ফোন ধরে বলেছে, ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আসতে। এসে দেখি আমার ভাইয়ের লাশ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর