‘বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়ে তুলব যেন বিশ্ব বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে’

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 20:15:10

এক সময় পচাত্তরের পরে যখন বাইরে ছিলাম, শুনতে হত; বাংলাদেশের মানে দুর্ভিক্ষের দেশ, বাংলাদেশ মানে ঘুর্ণিঝড়ের দেশ, জলোচ্ছ্বাসের দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। বাংলাদেশ হলে একটা নেগেটিভ কথা। খুব কষ্ট লাগত। এটা হতে পারে না। কাজেই সেই দেশকে এমনভাবে গড়ে তুলব যেন সারা বিশ্ব বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে বাংলাদেশের দিকে। এটাই আমার চাওয়া, আর কিছু না।

রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার রিং রোডে  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’এর বোরিং কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, কোন নামও চাই না, কোন ধনসম্পদ চাই না, কিচ্ছু চাই না। বাংলাদেশের জনগণ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বিশ্বে চলবে এটাই আমার চাওয়া। সেকারণেই সবসময় চেষ্টা করি নতুন কিছু করার। যেন বাংলাদেশের মানুষের জীবনে স্বচ্ছলতা আসে সেই সাথে  বিশ্বে যেন আমার দেশের মানুষ সম্মানের সাথে চলতে পারে।

পদ্মাসেতু নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ, বাধা বিপত্তির কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এটা নিয়ে যে (পদ্মাসেতু) কত ঝগড়া করতে হয়েছে, কত যে মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে সেটা আপনারা বুঝবেন না। যা হোক আল্লাহর রহমত আমরা নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের কাজ শুরু করতে পেরেছি। আজকে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান। তাই পদ্মাসেতু নিয়ে যখন এতকিছু হয়ে গেছে তাই পদ্মাসেতুর নামেই থাকবে। এটার সাথে আর কোন নাম যুক্ত হবার প্রয়োজন নাই। কাজেই আমি আমার মন্ত্রীকে বলব এখানে রাগ, ক্ষোভ করার কিছু নেই।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি কোন নামও চাই না, আমি কিছুই চাই না। জীবনে কোন কিছু আমার চাওয়া পাওয়ার নাই। কারণ আমিতো সব হারিয়ে নি:স্ব রিক্ত হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে এসেছি। নইলে আমার মত একদিনে যারা আপনজন হারায় তাদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব না। কিন্তু আমি করি একটা আদর্শের জন্য। আমারা বাবা এদেশের মানুষের জন্য সারাটা জীবন কষ্ট করেছে। আমার মা কষ্ট করেছে। এই দেশকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন তিনি। এই দেশের গরিব দু:খী মানুষ, তাদের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। আমি যদি এতটুকু কাজ গরিব, দু:খী মানুষের জন্য করতে পারি, আমার জীবনে সেটাই হবে সব থেকে বড় স্বার্থকতা। এর বাইরে আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আর কোনদিকে তাকাই না। দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করি। ওইটুকু চিন্তা করে যে আমার দেশের একটা গড়ীব মানুষও যেন গৃহহারা না থাকে। এদেশের কোন মানুষ গৃহহারা থাকবে না। প্রতিটি মানুষ শিক্ষা পবে। প্রতিটি মানুষের চিকিৎসা সেবা তার দোরগোড়ায় পৌঁছাব। প্রতিটি মানুষ সুন্দর ভাবে বাঁচবে যেটা অমার বাবার স্বপ্ন ছিল। তিনি বারবার যেটা চাইতেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন বলেই এই টানেলের বোরিংয়ের কাজের উদ্বোধন করতে পারলাম। এই টানেলের মাধ্যমে আমাদের এই অঞ্চল, গোটা চট্টগ্রাম অঞ্চলই আরো উন্নত হবে, সমৃদ্ধশালী হবে। আর পদ্মাসেতু নির্মাণ হয়ে গেলে আমার দক্ষিণাঞ্চল আরও উন্নত হবে, সমৃদ্ধশালী হবে। ওই অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। আমাদের জিডিপিতে আরো নাম্বার যুক্ত হবে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শম রেজাউল করিম, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হোসেন চৌধুরী নওফেল, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, তিন বাহিনীর প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর