রাজধানীর যানজট নিরসনে আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যালের পরিকল্পনা

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 04:16:33

রাজধানীর যানজট নিরসনে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে যানজট বিশ্বের অন্যান্য দেশেও রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘রাজধানীর যানজট নিরসনে আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা ও ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনা সরকার নিয়েছে। এটা চালু হলে যানজট নিরসন আরও কার্যকর হবে।’

প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলার উদাত্ত আহ্বান জানান।

বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সংসদ অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরকালে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ ও মুজিবুল হক চুন্নুর পৃথক দুটি প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানীর যানজট নিরসনে গণপরিবহণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা হবে। আমরা যখনই সরকারে আসি তখনই গণপরিবহণ ব্যবস্থার ওপর জোর দেই। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে বিআরটিসিসহ গণপরিবহন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছিল। কারণ বিআরটিসি লাভজনক নয়। আমরা ক্ষমতায় এসে আবার বিআরটিসিকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এসে অনেকগুলো বিআরটিসি বাস ক্রয় করি। কিন্তু আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত ৩ থেকে ৪০০ বিআরটিসির বাস পুড়িয়ে দিয়েছে। তাই আমরা গণপরিবহন যত বেশি চালু করতে পারি সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকা শহরের মেট্টোরেল, ফ্লাইওভার সবই গণপরিবহণের আওতায় করা হচ্ছে। যানজট নিরসনে বিআরটিসিকে শক্তিশালী করার উদ্যোগও সরকার নিয়েছে।’

কাজী ফিরোজ রশিদের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশেই ট্রাফিক সমস্যা আছে। লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বড় বড় দেশেরও এ সমস্যা রয়েছে। কারণ জনসংখ্যা বাড়ছে, মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় গাড়ি ব্যবহারের সংখ্যাও বাড়ছে।’

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে দেশের সকল গ্রামকে শহরের সুযোগ সুবিধা দিতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ অর্থনীতিতে বৈচিত্র এসেছে। কৃষিজ ও অকৃষিজ উভয় ক্ষেত্রে কর্মকাণ্ড বহুগুণ সম্প্রসারিত হয়েছে। ফলে গ্রামীণ পরিবারের আয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে অকৃষি খাতের অবদান বেড়ে চলেছে। আমাদের মূল লক্ষ্যই হলো, সকল গ্রামে শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সকল ধরনের নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার। এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার গ্রাম কেন্দ্রিক নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীন দেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নগর ও গ্রামের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করার উদ্দেশ্যে কৃষিবিপ্লব, গ্রামে বিদ্যুতায়ন, কুটির শিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগ-ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামা লের আমূল রূপান্তর সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে অঙ্গীকার করেছিলেন। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা প্রতিটি গ্রামকে শহরে উন্নীত করার কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।’

সরকার দলীয় অপর সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানীর ঢাকার জনসংখ্যার চাপ কমানোর জন্য ইতোপূর্বে রাজধানীর পাশ্ববর্তী এলাকায় চারটি স্যাটেলাইট সিটি নির্মাণের লক্ষ্যে পিপিপি পদ্ধতিতে প্রকল্প গ্রহণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই চারটি স্যাটেলাইট সিটি হচ্ছে- বংশী-ধামরাই স্যাটেলাইট টাউন উন্নয়ন, ধলেশ্বরী-সিংগাইর স্যাটেলাইট টাউন উন্নয়ন, ইছামতি-সিরাজদিখান স্যাটেলাইট টাউন উন্নয়ন এবং সাভার স্যাটেলাইট টাউনে হাইরাইজ অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প। প্রকল্পগুলো পিপিপি পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। এছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় রাজধানী ঢাকার পাশ্ববর্তী এলাকায় চারটি স্যাটেলাইট সিটি বিশেষ করে ঢাকা উত্তরে ও দক্ষিণে রাজউক কর্তৃক দুটি এবং জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঢাকার পশ্চিমে ও দক্ষিণে দুটি প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর