পতাকার মান রক্ষা করা সকল সৈনিকের কর্তব্য: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 08:12:50

পতাকা হল জাতির স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব, সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অফিসার ও সৈনিকদের উদ্দেশে বলেছেন, পতাকার মান রক্ষা করা সকল সৈনিকের কর্তব্য। জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা এবং যেকোনো ইউনিটের জন্য একটি বিরল সম্মান ও গৌরবের বিষয়। আর স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক জাতীয় পতাকা আপনাদের হাতে তুলে দিয়েছি। এই সম্মান ও গৌরব অজর্ন করায় ৭,৮,৯ এবং ১০ বীরকে আমরা আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। কর্মদক্ষতা, কঠোর অনুশীলন এবং কর্তব্যনিষ্ঠার স্বীকৃতি হিসেবে যে পতাকা আজ আপনারা পেয়েছেন তার মর্যাদা রক্ষার জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে আপনারা সদা প্রস্তুত থাকবেন।

রোববার (৩ মার্চ) রাজশাহী সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭,৮,৯ এবং ১০ বীর এর ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পদাতিক বাহিনীর গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের’ পাশাপাশি পদাতিক বাহিনীর দ্বিতীয় রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন আমরা প্রথম উপলব্ধি করি। কারণ আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীন দেশে বাংলাদেশের নামে একটি রেজিমেন্ট থাকবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েই ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট গঠনের ব্যাপারে নীতিগত অনুমোদন গ্রহণ করি। ২০০১ সালের ২১ এপ্রিল আমি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের পতাকা উত্তোলন করি। ২০১১ সালে এই রেজিমেন্টকে আমি মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় পতাকা প্রদান করি। এই রেজিমেন্ট বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী প্রতিষ্ঠিত একমাত্র রেজিমেন্ট। বর্তমানে এই রেজিমেন্টে ২টি প্যারা কমান্ডে ব্যাটালিয়ন সহ মোট ৪৩টি ইউনিট রয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন. দীর্ঘ প্রত্যাশিত পদ্মাসেতু নির্মাণের কাজ তদারকি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ প্রকল্প, হাতিরঝিল প্রকল্প, ফেনী জেলায় মহীপাল ফ্লাইওভার নির্মাণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প আমাদের সশস্ত্রবাহিনী করে যাচ্ছে। এমনকি পার্বত্য চট্টগ্রামে রাস্তাঘাট, পুল ব্রিজও আমাদের সেনাবাহিনী করে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে জাতিসংঘের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনছে সম্মান ও মর্যাদা। যাতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশ ও দেশের বাইরে এক সম্মানজনক অবস্থায় উন্নীত হয়েছে। একটি আধুনিক ও চৌকষ সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে সরকার বদ্ধ পরিকর উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা সেনাবাহিনীতে তিনটি নতুন ডিভিশনও প্রতিষ্ঠা করেছি। প্রথমবারের মত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্যারাকমান্ডো ব্রিগেড গঠন করা হয়েছে। দেশের আকাশ প্রতিরক্ষাকে আরো সুসংহত করতে সংযোজিত হয়েছে এম এল আর এস ও মিসাইল রেজিমেন্ট। অত্যাধুনিক বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, হেলিকপ্টার, আর্টিলারি গান ও মর্ডান ইনফ্যন্ট্রি গ্যাজেট ইত্যাদি সংযোজন করে সেনাবাহিনীর আভিযানিক সক্ষমতাকে বহুলাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে।

স্বাধীনতার পর জাতির পিতা অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও একটা শক্তিশালী সশস্ত্রবাহিনী গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছিলেনও বলেও জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা। তাঁর দেওয়া প্রতিরক্ষা নীতিমালা অনুসরণ করে বর্তমান সরকার সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নে করে যাচ্ছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে তিনবাহিনীর প্রধান, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ও সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর