চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা থাকলেও তা কাগজেই সীমাবদ্ধ আছে। ফলে আসন্ন বর্ষায় পাহাড়ি ঢলে হাওরবাসীর আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে দ্রুত পরিকল্পনা নিয়ে হাওরের বাঁধ নির্মাণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত ।
রোববার (৩ মার্চ) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা জানান। অক্সফাম ও পিপলস ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন (পপি) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দেশের সাতটি জেলা নিয়ে হাওর অঞ্চলের অবস্থান। সেখানে প্রায় ৪ কোটি লোকের বাস। এর মেধ্যে ৬০ থেকে ৮০ ভাগ তাদের জীবিকার জন্য হাওরের ওপর নির্ভর করে। চাষাবাদ করে তারা তাদের অন্ন জোগাড় করেন। কিন্তু ফসল রক্ষার্থে কোনো বাঁধ না থাকায় পাহাড়ি ঢলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ফলে সেখানে দিনেদিনে অভাবী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। যার প্রতিক্রিয়ায় হাওরে পুষ্টিহীনতা, অশিক্ষা, বাসস্থানের সমস্যা, বাল্য বিয়েসহ নানা ধরনের সামাজিক সমস্যাও বাড়ছে।
বক্তারা আরও বলেন, এই হাওরাঞ্চলগুলোকে যদি স্থায়ী পরিকল্পনার আওতায় এনে এর উন্নয়ন করা হয় তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনেক অবদান রাখতে পারতো।
পিপলস ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশনের নির্বাহী পরিচালক মোর্শেদ আলম সরকার বলেন, ‘উপকূলে যে বাঁধ নির্মাণ করা হয় তা একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ভিত্তিতে করা হয়। কিন্তু হাওর অঞ্চলে যেই বাঁধগুলা করা হয়েছিল তা শুধু কিছু দিনের জন্য। ফলে দেখা যায় এই বাঁধগুলো খুব বেশি পানির ধাক্কা নিতে পারে না, অল্পতেই ভেঙে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি ২০০১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মোট আটবার বাঁধ ভেঙে হাওরবাসীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। আর এখন যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে আগামী বর্ষায় আবারও ঢলের সম্মুখীন হতে পারে এই হাওর অঞ্চলের লোকজন। তাই হাওর রক্ষার জন্য খুব দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) মিহির বিশ্বাস, শরিফুজ্জামান শরিফসহ অন্যান্য সংগঠনের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।