বসন্তেই রাজশাহীর বাজারে তরমুজ

রাজশাহী, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, রাজশাহী, বার্তা২৪.কম   | 2023-08-29 22:49:22

গ্রীষ্মের তপ্ত দিনে তৃপ্তি এনে দেয় এক ফালি তরমুজ। গ্রীষ্মজুড়ে ফলটির চাহিদাও থাকে ব্যাপক। ফলে গ্রীষ্মের ফল হিসেবে সুপরিচিত তরমুজ।

তবে এবার বসন্তের শুরু থেকেই রাজশাহীর বাজারে ব্যাপকহারে দেখা মিলছে তরমুজের। কিন্তু এখনও শীতের আমেজ থাকায় দাম কম হলেও বিক্রি খুবই কম। ফলে হতাশ তরমুজ বিক্রেতারা। আর চুক্তি অনুযায়ী আগাম জাতের তরমুজ চাষিদের কাছ থেকে কিনে আড়ত ফেলে রেখে লোকসানের শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, রাজশাহীর বাজারে যে তরমুজ দেখা যাচ্ছে, তা উত্তরাঞ্চলে চাষ হয়নি। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে চাষ হওয়া আগাম জাতের তরমুজ রাজশাহীতে এসেছে।

যদিও রাজশাহীতে খুব অল্প পরিমাণে তরমুজ চাষ হয়। সেটা এখনও বাজারে আসেনি। দেড় মাস পর গ্রীষ্মকাল শুরুর দিকে রাজশাহীতে উৎপাদিত তরমুজ বাজারে পাওয়া যাবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত দুই সপ্তাহ ধরেই রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার, লক্ষ্মীপুর, রেলগেট, রেলস্টেশন, শিরোইল কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে তরমুজ বিক্রি করা হচ্ছে।

নগরীর শালবাগানের পাইকারি আড়ত থেকে এসব তরমুজ কিনে বাজারে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করছেন ফল ব্যবসায়ীরা। খুচরায় প্রতি কেজি ৪০ টাকা দর হাঁকা হচ্ছে এসব তরমুজের।

সোমবার (০৫ মার্চ) দুপুরে নগরীরর সাহেববাজারে তরমুজ কিনছিলেন রাজারহাতা এলাকার বাসিন্দা ওলিউল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ফাল্গুন মাস শেষ হতে চললেও এখনও শীত পড়ছে। বৃষ্টির কারণে শীত আরও বাড়ছে। এজন্য তরমুজ খাওয়া হচ্ছে না। তবে আমার ছেলে তরমুজ খুব পছন্দ করে। তাই ফলটি দেখে কিনলাম’।

বিক্রেতা অনিক আহম্মেদ বলেন, ‘অন্য বছরগুলোতে এ সময়েই আবহাওয়া গরম থাকে। সেই হিসেবে আগাম জাতের তরমুজ চাষ করেছেন অনেক চাষি। আমরাও লাভের আশায় পাইকারি দামে কিনে খুচরা বিক্রি করছি। তবে শীত থাকায় বিক্রি নেই বললেই চলে। আবহাওয়া গরম হলে বিক্রি জমবে বলে আশা করছেন তিনি।’
নগরীর শালবাগানের আড়তদার শফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘মৌসুম শুরুর আগেই বিভিন্ন জেলার চরাঞ্চলের তরমুজ চাষিদের সঙ্গে আমরা চুক্তি করে রেখেছি। চুক্তি অনুযায়ী এখন যে তরমুজ উঠছে তা আড়তে আনতে বাধ্য আমরা। আবহাওয়া খারাপের কারণে চাহিদা কম। ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে ধারণা করছি।’

তিনি জানান, আগাম জাতের কালা, বাংলালিংক, গ্রামীণ, আনারকলি, অলক্লিন, চায়না-২, এশিয়ান-২, বালিসহ বিভিন্ন জাতের তরমুজ উঠতে শুরু করেছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক জানান, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল ও ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের তরমুজ দিয়েই রাজশাহীর চাহিদা মেটে। রাজশাহী অঞ্চলে ফাল্গুন মাস থেকেই সচরাচর গরম পড়তে শুরু করে। এ অঞ্চলে গরম বেশি পড়ায় তরমুজের ব্যাপক চাহিদা থাকে।

তিনি বলেন, ‘লাভবান হতে ব্যবসায়ীরা মৌসুম জুড়ে তরমুজ ব্যবসায় ঝুঁকছেন। তবে এবার আবহাওয়া ভিন্ন বার্তা দেওয়ায় তারা লোকসানের মুখে পড়তে পারেন।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর