আমি আপনাদের জন্য বাংলাদেশে এসেছি। বিশিষ্ট লেখক অরুন্ধতী রায় মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।
অ্যাটমোস্ট এভরিথিং শিরোনামের অনুষ্ঠানে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন তিনি।
অনুষ্ঠানে শহিদুল আলম আপনি এখানে কেন এসেছেন- এ প্রশ্ন করলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে দুপুরে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে তার এ আলোচনা সভা অয়োজন করা হলেও নিরাপত্তার কারণে তা স্থগিত করা হয়। পরে সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ড. কামাল হোসেন, ডা. জাফরুল্লাহ, আইনজীবী ড.শাহদীন মালিক।
অরুন্ধতী বলেন, রাজনীতি এখন মানুষের জন্য মনে হয় করা হয় না। এখন রাজনীতি হয়, নদী, বাঁধ, বিভিন্ন প্রকল্পকে ঘিরে। এ সব কিছুকে রূপ দেওয়ার জন্য মানুষের চিরন্তন জীবন বিপন্ন করা হয়। দেশে উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু এ উন্নতি কার জন্য। রাজনীতিকরা যেকোনভাবে পরিবর্তন হলেও একটি দেশে ধনীগোষ্ঠী রয়েই যাচ্ছে। তারা পরবর্তী রাজনীতিবিদদের সঙ্গে নিয়ে তাদের ইচ্ছাই বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, রাজনীতিকদের খুবই ক্ষমতাবান মনে হলেও অনেক সময়ই তারা ক্ষমতাহীন।
তার উপন্যাস দ্য গড অব স্মল থিংসের কিছু লাইন শ্রোতাদের উদ্দেশে পড়ে শোনান অরুন্ধতী। তিনি বলেন, আমি একজন মোবাইল রিপাবলিক। মানুষের মধ্যে ধর্মীয় উন্মাদনা পারমানবিক বোমার মত চেপে বসে আছে।
এক প্রশ্নের কথায় জানান, বাংলাদেশ, ভারত বা পাকিস্তান এভাবে আমি এ দেশগুলোকে ভাগ করতে চাই না। আসলে এগুলো একই দেশ। পানির বণ্টন এ দেশগুলোকে জাতীয়তাবাদের দিক থেকে সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত তারা নিজেরই ক্ষতি করছে। বাঁধ নির্মাণ করে শেষ পর্যন্ত কারোও লাভ হবে না। গণতন্ত্র মানে শুধু নির্বাচনকে বোঝানো হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। আজ গণতন্ত্র যাদের প্রতিনিধিত্ব করে তা খুবই স্বল্প মানুষের জন্য।
এশিয়ার আলোকচিত্র উৎসব ছবিমেলায় অংশ নিতে গত ৩ মার্চ ঢাকায় আসেন বুকার পুরস্কারবিজয়ী ভারতীয় লেখক অরুন্ধতী রায়।
অরুন্ধতী রায় শুধু একজন ঔপন্যাসিক নন, বুদ্ধিজীবী এবং অ্যাকটিভিস্টও। তিনি পরিচিত হয়ে আছেন তাঁর পুরস্কার বিজয়ী উপন্যাস দ্য গড অব স্মল থিংসের জন্যে। ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত এ উপন্যাসটি ১৯৯৮ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার লাভ করেছিল। এছাড়াও তিনি পরিবেশগত সংশ্লিষ্টতা এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়েও জড়িত আছেন।