‘যোগ্য নেতৃত্ব উন্নত দেশ’ স্লোগানে শুরু হয়েছে দশম বাংলাদেশ ও তৃতীয় সানসো স্কাউট জাম্বুরী। শুক্রবার (৮ মার্চ) সকালে গাজীপুরের মৌচাকে জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সাত দিনব্যাপী স্কাউট জাম্বুরী শুরু হয়।
দেশ বিদেশ থেকে আসা স্কাউটরা মৌচাকে পৌঁছানোর পর পরই ব্যস্ত হয়ে পড়েন তাঁবু এলাকা সাজিয়ে বাসযোগ্য করতে। নির্ধারিত তাঁবু বুঝে নিয়ে তারা ছুটতে থাকেন ময়দানের দিকে। একদিকে তাঁবু এলাকা গোছানো আরেক দিকে রান্নার কাজ।
বেলা বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে বিভিন্ন স্কাউট কার্যক্রমে অংশগ্রহণের প্রস্ততিও। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হবার আগেই স্কাউটদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠে জাম্বুরী ময়দান।
এবার জাম্বুরীতে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, ব্রুনাই দারুস সালাম, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফিলিপাইন এর স্কাউট ও কর্মকর্তা ইতোমধ্যে হাজির হয়েছেন। তাদের পদচারণায় মুখরিত জাম্বুরী ময়দান এখন ভিন্নমাত্রা এনেছে রাতের তাঁবু ক্যাম্পে।
এদিকে স্কাউটদের মহাযজ্ঞ এই জাম্বুরীর প্রথম দিনে আনন্দঘন আয়োজনে উদযাপন করা হয়েছে বাংলাদেশে গার্ল ইন স্কাউটিং এর ২৫ বছর পূর্তি। জাম্বুরীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এরিনায় এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি।
বাংলাদেশে নারী স্কাউটদের দীর্ঘ ২৫ বছরের বিভিন্ন কার্যক্রম, সফলতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কমিশনার (গার্ল ইন স্কাউটিং) সুরাইয়া বেগম সভাপতিত্ব করেন।
বাংলাদেশ স্কাউটসের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় সাত দিনের এই জাম্বুরীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে আগামী রোববার (১০ মার্চ)। ঐ দিন বিকাল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রপতি ও চিফ স্কাউট মোঃ আবদুল হামিদ ১০ম বাংলাদেশ ও ৩য় সানসো স্কাউট জাম্বুরী উদ্বোধন করবেন।
উল্লেখ্য, স্কাউট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট ষ্টিফেনশন স্মিথ লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল অফ গিলওয়েল ২০ জন সদস্য নিয়ে ১৯০৭ সালে স্কাউট আন্দোলন শুরু করেন। পরে মেয়েদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে তাঁর বোন এ্যাগনেস ব্যাডেন পাওয়েল মেয়েদের জন্য গার্ল গাইড আন্দোলন গড়েন। এরপর তাঁর স্ত্রী অলিভ লেডী ব্যাডেন পাওয়েল গাইড আন্দোলনকে ফলপ্রসূ করে তোলেন। একসময় স্কাউটিংয়ের গতিশীল কার্যক্রম ও প্রশিক্ষণে মেয়েদের অন্তর্ভুক্তি দাবি হয়ে দাড়ায়।
১৯৯০ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ৩২তম ওয়ার্ল্ড স্কাউট কনফারেন্সে স্কাউটিং এ মেয়েদের অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯৯১ সাল থেকেই বিশ্বের বহু মুসলিম দেশসহ ৭৮টি দেশে গার্ল-ইন-স্কাউটিং প্রচলিত আছে। ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ স্কাউটস এর জাতীয় কাউন্সিলের ২১তম সভায় বাংলাদেশ স্কাউটসের গঠন ও নিয়ম এর সংশোধনীর মাধ্যমে গার্ল ইন স্কাউটিং আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়।
১৯৭২ সালে ৫৬ হাজার ৩২৫ জন সদস্য নিয়ে বাংলাদেশ স্কাউটস আন্দোলনের শুরু হয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের স্কাউট সদস্য সংখ্যা প্রায় ১৭ লাখ। এর মধ্যে ২০ ভাগই গার্ল ইন-স্কাউটিং এর সদস্য।