পরিচয় মিলেছে খুলনায় উদ্ধার হওয়া খণ্ডিত দেহের

খুলনা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, খুলনা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 21:11:24

খুলনায় পৃথক তিনটি স্থান থেকে উদ্ধার হওয়া খণ্ডিত লাশ সাতক্ষীরার কলেজ ছাত্র হাবিবুর রহমান সবুজের (২৬)। ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের ওষুধ নিতে নতুন (এ্যাপাচি) মোটরসাইকেল নিয়ে খুলনায় এসে নিখোঁজ হন সবুজ।

শুক্রবার (৮ মার্চ) সবুজের লাশ শনাক্ত করেন তার পিতা আব্দুল হামিদ সরদার। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ওমরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় খুলনা সদর থানায় মামলা হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), পিবিআই এবং সিআইডি পৃথকভাবে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করেছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে তার মরদেহ। নিহতের ময়না তদন্ত শনিবার সম্পন্ন হবার কথা রয়েছে।

নিহত সবুজের পিতা আব্দুল হামিদ জানান, সবুজ ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করতো। কয়েকদিন আগে ক্যান্সার আক্রান্ত মা জাহানারা খাতুনকে দেখতে বাড়ি এসেছিল। গত মঙ্গলবার সকালে তার মায়ের জন্য ওষুধ আনতে নতুন এ্যাপাচি মোটরসাইকেলে নিয়ে খুলনায় আসে সবুজ। পরদিন ফিরে আসার কথাও বলেছিল সে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ফিরে না আসায় তিনি সাতক্ষীরা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (নং-২৯৩, ০৭-০৩-২০১৯) করেন।
শোকাহত আব্দুল হামিদ আরও জানান, বৃহস্পতিবার তার খোঁজ জানতে খুলনায় ফোন করা হলে সাদি নামের এক ব্যক্তি ফোনটি রিসিভ করে জানায়, সবুজ মোস্তফা মামার সাথে যশোর গেছে। এরপর থেকে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে শুক্রবার সকালে সবুজের ফোন থেকে তাদের বাড়িতে একটি কল আসে। ফোনে অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয় ‘সবুজকে আমরা বেঁধে রেখেছি। ছয় লাখ টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।’

সবুজের বাবা আবদুল হামিদ আরও জানান, তার ছেলের সাথে খুলনায় ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। এ নিয়ে সবুজের বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়। এই মামলায় কিছুদিন আগে তার ছেলে জেলও খেটেছিল। তিনি দাবি করেন, ব্যবসার টাকার লেনদেনকে কেন্দ্র করে তাকে খুলনায় কৌশলে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘নিহতের মরদেহ শনাক্ত করেছেন তার পিতা। সাতক্ষীরা থেকে পিতাসহ আত্মীয়-স্বজন এসেছেন। মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলার পূর্বেই কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত করছে পুলিশ।'

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ একটি ব্যাগে মস্তক ও হাত পা বিহীন শুধুমাত্র দেহ শেরে বাংলা রোড এলাকা থেকে উদ্ধার করে। এরপর ফারাজী পাড়ার একটি ক্লিনিকের গলি থেকে বস্তায় মুখমণ্ডলসহ মাথা উদ্ধার করা হয়। ক্লিনিকের ওই গলি রেখে ময়লাপোতা মোড়ের দিকে যেতে ডান দিকে আর একটি গলি যেটি শিরিশ নগর গেটের সাথে গিয়ে মিলেছে সেই গলিতে একটি প্যাকেটে দুই পা চার টুকরো করা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। একই গলিতে আর একটি প্যাকেটে দুই হাত এবং অপর একটি ব্যাগে নাড়িভুঁড়ি, অণ্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গ পাওয়া যায়।

লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নগরজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা খুলনায় ঘটেনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর