সিলেট বিভাগের ওরা বিদ্রোহী, ওরা বিজয়ী

সিলেট, জাতীয়

নূর আহমদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, সিলেট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 15:57:35

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হয়েও বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন ৫ প্রার্থী। সম্পূর্ণ স্রোতের বিপরীতে গিয়ে পড়েছেন বিজয়ের মালা। বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে যারা পরাজিত হয়েছেন তারাও ছিলেন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রদীপ রায়ের জন্য মাঠে সরব ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জয়া সেনগুপ্তা। নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অভিযোগে এলাকা ছাড়ার জন্য তাকে বারবার সতর্ক করেছিলেন নির্বাচন কমিশন। তারপরও মাঠে ছিলেন জয়া। তবুও জয় এনে দিতে পারেননি প্রদীপ রায়কে। এই উপজেলায় মাত্র ৬২ ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী।

তিনি মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২০ হাজার ৯২২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রদীপ রায় নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২০ হাজার ৮৬০ ভোট।

সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদীয় আসনভুক্ত উপজেলা ধর্মপাশা। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে ৩৭ হাজার ৪ শত ৭৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেন রোকন। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী শামীম আহমদ মুরাদ নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৯ হাজার ৩শত ৭২ ভোট। স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন তার নির্বাচনী এলাকাভুক্ত উপজেলায় নৌকার প্রার্থীর জন্য সরব ছিলেন। তাকে বারবার সতর্ক করেছিলেন নির্বাচন কমিশন। তাতেও কাজ না হওয়ায় নির্বাচনের ঠিক দুই দিন আগে স্থগিত করা হয় জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এই আসনের সংরক্ষিত আসনের এমপি এডভোকেট শামীমা শাহরিয়ারকেও সতর্ক করেছিলেন নির্বাচন কমিশন। সেখানেও বিদ্রোহী প্রার্থীর বিজয় ঠেকানো যায়নি।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীক নিয়ে ২৩ হাজার ২শত ৫২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী সফর উদ্দিন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী রফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ১৭ হাজার ৬ শত ১ ভোট।

হবিগঞ্জ জেলায় দুটিতে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। এরমধ্যে সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাচ্ছিরুল ইসলাম (আনারস) ৩৫ হাজার ২৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমুদুল হক (ঘোড়া) পেয়েছেন ২৮ হাজার ৪০ ভোট। এই উপজেলায় নৌকা প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীয় আসতে পারেননি।

জেলার নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম (ঘোড়া)। প্রাপ্ত ভোট ৪৭হাজার ২৩০। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী (নৌকা)। প্রাপ্ত ভোট ২৬ হাজার ১১৩। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থীর সাথে পরাজিত প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান প্রায় ২১ হাজার। 

অন্যদিকে অনেকস্থানে স্থানীয় এমপিদের অব্যাহত চাপ উপেক্ষা করে বিজয়ী হন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। প্রায় সবকটা উপজেলায় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ছিলেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর