মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারে বাতি জ্বলবে কবে?

ঢাকা, জাতীয়

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 18:00:32

রাজধানীর যানজট নিরসনে বেশ কয়েকটি পয়েন্টেই নির্মাণ করা হয়েছে উড়াল সড়ক বা ফ্লাইওভার। এসব উড়াল সড়কের মধ্যে ব্যস্ততম একটি মগবাজার-মৌচাক-বাংলামোটর উড়াল সড়ক।

পুরো উড়ালসড়কটি তিন ভাগে বিভক্ত। একটি অংশ সাতরাস্তা-মগবাজার-হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল। আরেক অংশ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন মোড় থেকে কারওয়ান বাজারে নেমেছে। আরেক অংশ গেছে মৌচাক-মগবাজার-মালিবাগ-শান্তিনগর-রাজারবাগ হয়ে।

কয়েক ভাগে উড়াল সড়কটি উদ্বোধন করা হয়। সবশেষ ২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর পুরো উড়াল সড়কটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি নির্মাণে কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা দায়িত্বে ছিল।

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ৯ কিলোমটার দৈর্ঘ্যের এই উড়াল সড়কের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। প্রথমে প্রকল্পটি ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও সময় ও ব্যয় বাড়িয়ে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গড়ায়। প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৭২ কোটি ৭০ লাখ।

পরবর্তীতে নকশার পরিবর্তন আনায় ব্যয় ও সময় বাড়ে। শেষ পর্যন্ত প্রকল্পের ব্যয় দাড়ায় ১ হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার অর্থায়ন করেছে ৪৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আর ৭৭৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা দিয়েছে সৌদি ফান্ড ফর ডেভলপমেন্ট (এসএফডি) ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট (ওএফআইডি)।

উড়াল সড়কটি নির্মাণের পর এর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে দেখা দেয় টানা হেঁচড়া। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধিনে নির্মাণ হলেও এর দেখভালের দায়িত্বে আসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর ডিএসসিসিকে দায়িত্ব দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।

যখন উড়াল সড়কটি ডিএসসিসির নিকট হস্তান্তর করা হয়, তখন থেকেই এই উড়াল সড়কের ট্রাফিক সিগন্যাল, লাইটিং, উড়াল সড়কের নিচে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ ও পরিচ্ছন্নতার কাজে ত্রুটি ছিল। অবস্থায় ডিএসসিসিকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

উড়াল সড়কটি উদ্বোধনের প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হতে চলছে, এখনো সিগনাল ব্যবস্থা ও সড়ক বাতি জ্বালাতে পারেনি কোনো সংস্থাই। কবে জ্বলবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারেনি কেউ।

এই উড়াল সড়কটির মগবাজার-মৌচাক-কারওয়ান বাজার-মালিবাগ অংশ এখনো রাতে বেলা অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে। উড়াল সড়কে ল্যাম্প পোস্ট থাকলেও নেই সড়ক বাতি।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. রাজিব খাদেম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমরা আসলে ডিটেকটিভ অবস্থায় বুঝে পেয়েছি। এখানে কয়েকটি বিভাগের কাজ রয়েছে। আমি ট্রাফিক সাইডের কথা বলতে পারি। এই উড়াল সড়কের সড়ক বাতি, পরিচ্ছন্নতা, সিগন্যাল সিস্টেম সব কিছু নিয়ে কাজ করতে একটি ডিপিপি তৈরি করে মন্ত্রণালয়কে পাঠিয়েছি। এখন একনেক বৈঠকে ডিপিপি পাস হলে অর্থ ছাড় হলেই কাজ শুরু করতে পারবো। কবে অর্থ ছাড় হবে কবে কাজ শুরু হবে বলা মুশকিল।’

সরেজমিনে উড়াল সড়কটি ঘুরে দেখা গেছে, রাতের বেলায় ঘুট ঘুটে অন্ধকার নেমে আসে। এছাড়া রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ফ্লাইওভারের উপরে ধুলির আস্তরণ পরে সেখানে মাটির স্তুপে পরিণত হয়েছে। যে কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই উড়াল সড়তে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। আর কত দিনে এই উড়াল সড়ক স্বস্তিদায়কভাবে ব্যবহার করা যাবে তা বলতে পারছে না খোদ দায়িত্বরত সংস্থাই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর