বরিশালের ৭ রুটে ফের বাস চলাচল বন্ধ

, জাতীয়

সেন্ট্রাল ডেস্ক ২ | 2023-07-09 03:12:43

বাস মালিক সমিতির দ্বন্দ্বের জেরে ২০ দিনের ব্যবধানে বুধবার থেকে বরিশালের ৭ রুটে সরাসরি বাস চলাচল ফের বন্ধ হয়ে গেছে। পরস্পরবিরোধী দাবি-দাওয়া নিয়ে বরিশাল, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা বাস মালিক সমিতির সঙ্গে ঝালকাঠি জেলা বাস মালিক সমিতির বিরোধে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই রুটগুলোর হাজার হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বন্ধ রুটগুলো হচ্ছে— বরিশাল-খুলনা, বরিশাল-ভাণ্ডারিয়া, বরিশাল-পিরোজপুর, বরিশাল-মঠবাড়িয়া, বরিশাল-ঝালকাঠি ও বরিশাল-পাথরঘাটা। অপরদিকে ঝালকাঠি মালিক সমিতিও পিরোজপুর এবং ঝালকাঠি থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো বরিশাল-ঝালকাঠি সীমান্তে রায়াপুর নামক স্থানে এসে যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছে। ঝালকাঠির শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। জানা গেছে, বরিশাল-কুয়াকাটা, বরিশাল-পটুয়াখালী, বরিশাল-বরগুনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৭টি রুটে ঝালকাঠি মালিক সমিতি তাদের বাস চলাচল করতে দেওয়ার দাবি তুললে তাতে রাজি হয়নি বরিশাল, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা বাস মালিক সমিতি। এরই জেরে ঝালকাঠি জেলা বাস মালিক সমিতির আহ্বানে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে এসব রুটে টানা তিন দিন বাস চলাচল বন্ধ থাকে। বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. শহীদুজ্জামানের আহ্বানে গত ২০ ডিসেম্বর বরিশাল ও ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির মধ্যে অনুষ্ঠিত এক সমঝোতা সভায় ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতি ২ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে। ঝালকাঠি মালিক সমিতির সভাপতি সরদার মো. শাহ আলম জানান, ২০ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রশাসনের আহ্বানে ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার পুনরায় বরিশাল-বরগুনা ও পটুয়াখালী মালিক সমিতির সঙ্গে তাদের সমঝোতা বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার তারা বরিশাল সার্কিট হাউসে এলেও বরিশালসহ অপর দুই জেলা বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ আসেননি। এ কারণে বুধবার থেকে তারা পুনরায় সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির দাবি, তাদের জেলার সড়ক ব্যবহার করে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে বরিশালসহ অন্যান্য জেলার বাস চলাচল করলেও ঝালকাঠি-বরিশাল ছাড়া অন্য কোনো রুটে ঝালকাঠি মালিক সমিতির বাস চলাচল করতে দেওয়া হয় না। এসব রুটে বাস চলতে দেওয়ার দাবিতে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে পিরোজপুর, ঝালকাঠি, মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা থেকে ছেড়ে আসা কোনো বাস বরিশালের রূপাতলী টার্মিনালে যায়নি। একইভাবে বুধবার থেকে বরিশালে ঢুকছে না পিরোজপুর, ঝালকাঠি, মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা থেকে ছেড়ে আসা কোনো বাস। ওইসব রুটের যাত্রীদের বরিশাল-ঝালকাঠি সড়কের শেষ সীমান্ত রায়াপুর নামক স্থানে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রায়াপুর থেকে ইজিবাইক ও টেম্পোতে হাজার হাজার যাত্রী বাড়তি ভাড়া দিয়ে বরিশাল নগরী ও রূপাতলী টার্মিনালে আসছেন। বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন অভিযোগ করেন, বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কের খয়রাবাদ সেতুর পরে ঝালকাঠি জেলার ৪/৫ কিলোমিটার সড়ক আছে। এ জন্য বরিশাল থেকে মোল্লারহাট রুটে বরিশাল ও ঝালকাঠি সমিতির সমসংখ্যক বাস চলে। এখন ঝালকাঠি জেলা বাস মালিক সমিতি পটুয়াখালী, বরগুনা, কুয়াকাটাসহ ৭টি রুটে তাদের বাস চালানোর অন্যায় আবদার করছে। তারা ওই রুটে বাস চালানোর দাবি জানালেও কোনো রুটেই যাত্রী পরিবহনের জন্য তাদের রুট পারমিট নেই। তিনি বলেন, ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি থাকায় ২ জানুয়ারির সভার তারিখ পরিবর্তনের জন্য বরিশাল, বরগুনা ও পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতি বিভাগীয় কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছে। এ জন্য তারা ২ জানুয়ারির পূর্বনির্ধারিত সভায় যাননি। এ কারণে ঝালকাঠি জেলা মালিক সমিতি খামখেয়ালি করে বুধবার থেকে বরিশালের কোনো বাস ঝালকাঠি অংশে ঢুকতে দিচ্ছে না। আবার ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের বিভিন্ন রুট থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো বরিশাল অংশে ঢুকছে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর