‘অপরাধী আত্মসমর্পণ করলে স্বাভাবিক জীবনের ব্যবস্থা হবে’

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 10:46:56

সমাজবিরোধী যে কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত কোনো ব্যক্তি যদি আত্মসমর্পণ করে সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে চায়, তাহলে তাদের জন্য সরকার সে ব্যবস্থা করে দেবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, আমাদের সব সময় এটাই আহবান থাকবে যে, যারাই সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত তারা যদি আত্মসমর্পণ করে, অবশ্যই তাদের জীবনযাপন করার জন্য যথযাথ ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব। দেশে শান্তি বজায় থাকুক, দেশের মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচুক, সেটাই আমরা চাই।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সুন্দরবনে আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের জীবনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সুন্দরবন এলাকা আমাদের একটা বিশাল সম্পদ। কিন্তু প্রতিনিয়ত এখানে মানুষগুলো নানা রকম দুর্ভোগ পোহাতেন এবং এই বনদস্যুদের দ্বারা আক্রান্ত হতেন। র‌্যাব সদস্যরা সেখানে বিরাট একটা সাফল্য অর্জন করে। ওই এলাকা আমরা দস্যুমুক্ত করার জন্য ২০১২ সালে একটা টাস্কফোর্স তৈরি করে দিয়েছিলাম এবং প্রায়ই আমাদের যৌথ বাহিনী সেখানে একত্রে অভিযানও পরিচালনা করতো। সুন্দরবন এলাকায় জলদস্যুদের বিরুদ্ধে এই অভিযান চলতে থাকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলে প্রায় ৩২টি বাহিনীর ৩২৮ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে। আমরা তাদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে ঘরবাড়ি তৈরি এবং পরিবারের সাথে সুন্দরভাবে জীবনযাপন যেন করতে পারে, তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তাদের ছেলেমেয়েরা স্কুল কলেজে পড়াশোনা করছে। একটা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। আগে দস্যুর সন্তান হিসেবে তারা যে অপমানিত হতো, সেটা এখন হচ্ছে না। তারাও একটা সম্মানজনক জীবন পাচ্ছে।

মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে সরকারপ্রাধান বলেন, মাদক একটা বিষাক্ত জিনিস; কেমিক্যাল দ্বারা তৈরি। মাদক সেবনের ফলে একেকটা জীবন অকালে ঝড়ে যাচ্ছে। একেকটা পরিবার আজকে কষ্ট পাচ্ছে। ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। দেশও ধ্বংসের মুখে যায়। যে কারণে মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এটা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আমাদের যুব সমাজ তারা যেন মাদকাসক্ত না হয় সেজন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রমও অব্যাহত রাখতে হবে। ঠিক যেভাবে আমরা সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একত্রিত করে জঙ্গিবাদ দমনে সফলতা অর্জন করেছিলাম, ওইভাবে আমাদের একটা সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

কোনো নিরপরাধ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন সে দিকে লক্ষ্য রাখতে র‌্যাবের প্রতি আহবানন জানান শেখ হাসিনা। বলেন, যারা অন্যায় করবে, তারা যে-ই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে, নিরপরাধ মানুষকে যেন হয়রানি না করা হয়।

র‌্যাব সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। আপনারা সবাই বিভিন্ন বাহিনী থেকে এসেছেন, বিভিন্ন পরিবার থেকে এসেছেন। কাজেই দেশের আর্থসামাজিক উন্নতি হলে এর সুফল কিন্তু প্রত্যেকের পরিবারের সদস্যরা পাবেন। গ্রামের মানুষের ভাগ্য উন্নত হবে।

তিনি বলেন, একটা সময় ছিল, যখন দেশে শান্তি ছিল না। মানুষ নিরাপদে চলতে পারতো না। একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে ছিল দেশ। অন্তত আমি এটুকু দাবি করে বলছি, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে শান্তি ফিরেছে। দেশের মানুষ এখন নিরাপদে উন্নত জীবনযাপন করছে। জঙ্গিবাদের ঘাঁটি ভেঙে দিয়েছে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত হয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে আমাদের। প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে তুলনামূলকভাবে। আমরা এখন একটি সুখি সমৃদ্ধ দেশে বাস করছি।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর