বৃহৎ শিল্প গড়ে তোলার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 13:08:53

বাংলাদেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ রয়েছে উল্লেখ করে দেশের উন্নয়নে বৃহৎ শিল্প গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘দেশে ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের অনেক বিকাশ হয়েছে। কিন্তু বৃহৎ শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেনি। তাই যাতে বৃহৎ শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা যায়, সে জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।’

রোববার (৩১ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শিল্পমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শিল্পায়নের জন্য ব্যাংকের সুদের হার কমানোর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ব্যাংকের সুদ কমানোর উদ্যোগ নিলাম, ব্যাংকগুলোকে বেশকিছু সুযোগ-সুবিধাও করে দিলাম। কিছু ব্যাংক সুদের হার ৯ শতাংশে নামাল। অন্য ব্যাংকগুলো করল না। তারা সুযোগ চাইল কিন্তু সুদের হার কমাল না। এখন তাদের দিকে নজর দিতে হবে। তারা ঠিকঠাক মতো ভ্যাট দেয় কি-না দেখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে ৭৮ লাখ শিল্প-কারখানা বেসরকারিখাতে রয়েছে। বিদ্যুৎ-বিমান, হেলিকপ্টার, শিল্প-কারখানা, টেলিভিশন-রেডিও বলেন ব্যবসা-বাণিজ্যের সব খাত উন্মুক্ত করে দিয়েছি। আমরা চাই বেশি বেশি বিনিয়োগ হোক, কর্মসংস্থান হোক।'

কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দেয় না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা শিল্প-কারখানা ঠিকই স্থাপন করেন, কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেন না। বর্জ্যের কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, নদী নষ্ট হচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কিছু টাকা খরচ হবে। এখানে শিল্প-মালিকদের কার্পণ্য কেন সেটা আমার একটা প্রশ্ন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঋণ শোধ না করার প্রবণতা অনেকের মধ্যে রয়েছে। এই প্রবণতা দূর করতে হবে। ঋণ ফেরত দিলেই ব্যাংকগুলো সহজেই সুদের হার কমাতে পারবে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি ব্যাংক-বীমা করেছে। তাদের সুযোগ-সুবিধাও দিয়েছে। কৃষকরা এখন ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন না। শিক্ষকরা ব্যাংক থেকে বেতন নিচ্ছেন।’

শিল্পের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নদীপথ বৃদ্ধি করছি, বিভিন্ন নদী খনন ও ড্রেজিং করছি। রাজশাহী, সৈয়দপুর বিমানবন্দর চালু করে দিচ্ছি। ১০০টি শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করতে চাই, আধুনিক করতে চাই। ছেলে-মেয়েরা অনেকে লেখাপড়া করে কৃষক হতে চায়। আজকে মিঠাপানির মাছ তৃতীয় স্থান অধিকার করে আছে। সেই সঙ্গে মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া, কুঁচেসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী রফতানির সুযোগ আছে।’

তিনি বলেন, ‘বেশি বেশি শিল্প-কারখানা গড়ে উঠুক। তবে কৃষি জমি নষ্ট করে এখানে-সেখানে শিল্প গড়ে উঠুক, আমি তা চাই না। কৃষির দরকার আছে, কারণ কৃষির মাধ্যমে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে হবে। আবার শিল্পায়নও চাই। কারণ শিল্পায়ন ছাড়া কোনো দেশ উঠে দাঁড়াতে পারে না।‘

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই স্বীকৃতি আমাদের ধরে রাখতে হবে। যারা শিল্পপতি আছেন, আপনারা যা উৎপাদন করেন সবকিছু তো রফতানির জন্য নয়; দেশের বাজার তৈরি করতে হবে। এ বাজারটাকে আপনাদের ধরতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর