রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মায় বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই স্থানীয় প্রভাবশালীরা দিন-রাত বালু উত্তোলন করছেন। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে পদ্মা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকায় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছে চরবাসী। ফলে কৃষি আবাদও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। পদ্মার মধ্য চাকরাজাপুর ইউনিয়নের সদস্য, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এবং কয়েকজন স্কুল শিক্ষকসহ শতাধিক ব্যক্তি ওই অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষর করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন করছেন। তারা কুষ্টিয়া থেকে ড্রেজার ভাড়া করে এনে রাত-দিন রাজশাহীর বাঘা পদ্মার সীমানা চকরাজাপুর পদ্মা এলাকায় বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন।
ইউনিয়নবাসীর অভিযোগ, বালু উত্তোলনকারীরা সরকারি কোনো অনুমোদন না নিলেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। প্রশাসনকেও তারা ম্যানেজ করে ফেলেছে অভিযোগ স্থানীয়দের।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল আলম বলেন, 'কিছু ব্যক্তি ড্রেজার নিয়ে এসে বালু উত্তোলন করছেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম তারা কোনো অনুমতি ছাড়াই এটা করছে। আমি সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ করেছি। তবে তারা কোনো কর্ণপাত করছে না। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে জেলা প্রশাসক ও ইউএনও মহোদয়কে অভিযোগ দিয়েছি।
জানতে চাইলে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিন আলী বলেন, মাসখানেক আগে ওই অঞ্চলে ইউএনও-এর নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়েছিল। তারপর থেকে বালু উত্তোলন বন্ধই ছিল। এরপর আবার কারা এটা শুরু করেছে, তা আমাদের জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।'
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'চকরাজাপুর ইউনিয়নের যে স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, সেখানে সরকারি অনুমতি নেই। কিছু দিন আগে অভিযান চালিয়ে ১১ জনকে গ্রেফতার এবং দুটি বালু উত্তোলনের নৌকা জব্দ করা হয়েছিল। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৮ জনের কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। তবে ফের বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত এ বিষয়েও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'