এক দশক ক্ষমতায় থাকায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করেছি: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 15:39:55

টানা এক দশক আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধিত হয়েছে। যার সুফল দেশের মানুষ ভোগ করছে। একই সঙ্গে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণের মধ্য দিয়ে একটা দেশকে উন্নত করা সম্ভব, যার প্রমাণ বাংলাদেশ।

বুধবার (৩ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১১টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধন, ১৩টি অঞ্চলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ২০টি শিল্পকারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালে নির্বাচনের পর ২০০৯ সালে আমরা সরকার গঠন করি। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত অর্থাৎ একটানা প্রায় এক দশক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার ফলে আমাদের যে পরিকল্পনা ছিল, অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা সেখানে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। সেটা অর্জন করতে পেরেছি। বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ একটা সুষ্ঠু পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে যদি আমরা এগোতে থাকি তাহলে যে কোনো একটি দেশকে উন্নত করা সম্ভব। অন্তত আমি এটুকু দাবি করতে পারি যে, গত দশ বছরে সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।’

বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি তখন কিন্তু সারা বিশ্বে অর্থনৈতিকভাবে মন্দা। এই মন্দার মধ্যে বাংলোদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগোতে পারবে তখন কিন্তু এটা অনেকেই ভাবতে পারেনি। আমরা কিন্তু সেই অর্থনৈতিক মন্দা অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হই। আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধিতে আমরা সক্ষম হই।’

অর্থনীতির গতিশীলতা এসেছে বলে অনেক বিদেশফেরত তরুণ এখন দেশেই কাজ করছে জানিয়ে এ সরকার প্রধান বলেন, ‘অনেকে ছেলে-মেয়েদের বিদেশে পাঠিয়েছিল পড়াশোনা করতে। আজকে দেশের অর্থনীতিতে যেহেতু গতিশীলতা এসেছে তাদের অনেকেই দেশে ফিরে এসেছে। বাবার ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছে। কাজেই তরুণ সমাজ তারা যে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে, শিল্পায়নের ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে, সেটার সত্যিই আমি প্রশংসা করি। কেন না অনেক তরুণ মুখ আমরা দেখি যারা কাজ করে যাচ্ছে।

দেশের উন্নয়নের জন্য বিশেষ ইকোনমিক জোনের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জমির স্বল্পতা আছে, আমাদের খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। যেহেতু আমাদের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর। কৃষি আমাদের প্রয়োজন, কিন্তু সেই সাথে সাথে শিল্পায়নও আমাদের প্রয়োজন। আর সেই কথা চিন্তা করেই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, সারা বাংলাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলব। যেখানে দেশি বিদেশি সব ধরনের বিনিয়োগ হবে এবং বিনিয়োগটা অঞ্চলভিত্তিক হবে। অর্থাৎ শিল্পায়নটা কোথায় হবে কীভাবে হবে, সেটা আমরা ঠিক করে দেব। যত্রতত্র আামাদের কৃষি জমিটা নষ্ট হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গবেষণা করে আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো শুরু করেছি। কারণ, মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে সব থেকে বড় হল খাদ্য। কাজেই বাংলাদেশকে আমাদের ক্ষুধা মুক্ত করতে হবে, দারিদ্র্যমুক্ত করতে হবে, খাদ্য উৎপাদনও আমাদের বাড়াতে হবে। আমাদের দেশে যে কোনো সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়। এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনেক সময় ফসল নষ্ট হয়। কাজেই দুর্যোগকালীন আমাদের খাদ্য মজুদের ব্যবস্থাও করতে হবে। আবার আমার যেন কারও কাছে হাত পাততে না হয়, নিজেরা মর্যাদা নিয়ে থাকতে পারি সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য নিয়েই আমাদের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দেওয়ার পরিকল্পনা।’

সমগ্র বাংলাদেশকে মিলিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এর শুভ ফলটা পাচ্ছেন আপনারা যারা ইন্ডাস্ট্রি করছেন, বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করছেন। তারা নিজেরাই দেখতে পারছেন তার একটা মার্কেট নিজের দেশের ভেতরেই সৃষ্টি হচ্ছে, যেহেতু দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী প্রমুখ।

আরও পড়ুন: রোজায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়াবেন না: প্রধানমন্ত্রী

এ সম্পর্কিত আরও খবর