মেয়ের জানাজার ইমাম বাবা

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 01:52:46

ফেনী থেকে: সোনাগাজীর উত্তর চর চান্দিয়ার নিজ বাড়ি থেকে নুসরাত জাহান রাফির মরদেহ সাবের পাইলট স্কুল মাঠে নেওয়া হয়। সেখানেই তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আর নুসরাতের জানাজা পড়িয়েছেন তার বাবা মাদরাসা শিক্ষক মাওলানা একেএম মুসা। এতোদিন যাকে নিজের আদরে আগলে রেখেছিলেন অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে আজ তাকে বিদায় দিতে হচ্ছে। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় নিশ্চয় ডুকরে কেঁদে উঠছে অসহায় বাবার মন। 

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ৫৩ মিনিটে অনুষ্ঠিত জানাজায় অংশ নেন হাজারো মানুষ। জানাজা শেষে তার নানা বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল নুসরাতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এরপর মরদেহ বহনকারী একটি অ্যাম্বুলেন্স তার নিজ এলাকা ফেনী সোনাগাজীর উত্তর চর চান্দিয়ার উদ্দেশে রওয়ানা হয়। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে এলাকাবাসী স্থানীয় বাজার ও তার বাড়িতে ভিড় জমায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল ৫টার দিকে নুসরাতের মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি তার বাড়িতে প্রবেশ করে। এর পর জানাজার জন্য তাকে নেওয়া হয় সোনাগাজী বাজারস্থ স্কুল মাঠে। বাজার থেকে নুসরাতের বাড়ি দুই কিলোমিটার দূরত্ব হলেও মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের পেছন পেছন মানুষ জানাজাস্থলে যান। কানায় কানায় পূর্ণ হয় পুরো স্কুল মাঠ।

এর আগে নুসরাতের মরদেহ তার নিজ বাড়িতে নেওয়া হলে তাকে এক পলক দেখার জন্য ভিড় জমান আশপাশের এলাকা থেকে আসা মানুষ। আর পৌরসভার বাজারে সড়কের দুই পাশে দাঁড়িছিলেন এলাকাবাসী ও আত্মীয় স্বজনরা।

এদিকে নুসরাতের মরদেহ আসাকে কেন্দ্র করে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ফেনী-সোনাগাজী সড়কেও যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে পুলিশের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়।

সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ জানান, একবার তাকে দেখার জন্যই দাঁড়িয়ে আছি। তার মতো এরকম নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার যেন আর কেউ না হয়।

উল্লেখ্য, ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় আলীম পরীক্ষা চলাকালে নুসরাত জাহান রাফিকে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। সেদিনই দগ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয় নুসরাতকে। ৭৫ ভাগ পুড়ে যায় তার শরীর। পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর