১৫ মাসে যৌন সহিংসতার শিকার ২০১ জন

ঢাকা, জাতীয়

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 10:45:19

ফেনীর সোনাগাজীর নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুতে শোকাবহ পুরো দেশ। নারী প্রতি যৌন হয়রানি আর সহিংসতা যেন চিরাচরিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে গত মার্চ মাস পর্যন্ত ১৫ মাসে যৌন হয়রানি ও সহিংতার শিকার হয়েছেন ২০১ জন নারী। আইন ও সালিশ কেন্দ্র সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন ২০১ জন। এর মধ্যে মারা গিয়েছেন ২৪ জন। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে যৌন হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১৭৩ জন ও চলতি বছরের প্রথম তিস মাসে সেই সংখ্যা ২৮ জন।

যৌন হয়রানির শিকার হয়ে সামাজিক রক্তচক্ষুর ভয়ে অনেকেই আত্মহননের পথ বেছে নেন। জানা যায়, ২০১৮ সালে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন আট জন। আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন একজন। যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় খুন হয়েছেন ১২ জন। এর মধ্যে তিনজন নারী ও ৯ জন পুরুষ। বখাটে কর্তৃক লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন ১২০ জন। যৌন হয়রানিকে কেন্দ্র করে বখাটেদের সাথে সংঘাতে আহত হয়েছেন ২৬ জন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে  পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, গত তিন মাসে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিন জন। আর প্রতিবাদ করায় খুন হয়েছেন একজন। বখাটেদের কর্তৃক লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন ১৯ জন। বখাটেদের উৎপাতকে কেন্দ্র করে গঠিত সংঘাতে আহত হয়েছেন পাঁচ জন।

শুধু তাই নয় এ ধরণের ঘটনায় মূল ক্ষতির শিকার হন নারীরাই। অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ করে দেন অভিভাবকরা। ২০১৮ সালে যৌন হয়রানির শিকার হওয়া এমন ছয় জন মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ করে দেন অভিভাবকরা।

বিচারহীনতা, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা, রাজনৈতিক আশ্রয়, গবেষণা না  থাকা, যথার্থ শিক্ষায় তরুণদের শিক্ষিত না করাই এ ধরণের অপরাধ বাড়িয়ে তুলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এখনই লাগাম টেনে না ধরলে ভবিষ্যতে অসংখ্য নুসরাতের মরদেহ নিয়ে কাঁদতে হবে বলছেন তারা।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আইনজীবী নীনা গোস্বামী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা নতুন কিছু নয়। বার বার একই ঘটনা ঘটছে। নারীরা হচ্ছেন মূল শিকার। যৌন হয়রানি ও সহিংসতার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা উৎসাহিত হচ্ছেন এসব কাজে। অনেক সময় অপরাধীরা রাজনৈতিক পরিচয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে কেউ যাতে যৌন হয়রানি করতে না পারেন, সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর