লাইসেন্সের শর্তভঙ্গ করে ক্যাবল নেটওয়ার্ক অপারেটররা বিজ্ঞাপন, নাটক, সিনেমা এবং গান প্রচার করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, 'শিগগিরই কোয়াব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে একটা সময় বেঁধে দেওয়া হবে। এরপর কেউ প্রচার করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
বুধবার দুপুরে (১৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাইবার ক্যাফে ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে মন্ত্রী হুঁশিয়ারি বার্তা দেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমরা সময় নিশ্চিত করেছি। আপনারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে কেবল নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে আসছেন। বাংলাদেশে কেবল নেটওয়ার্ক ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে আসছেন, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। বাংলাদেশে যে তিনকোটি টেলিভিশন ব্যবহার হয়, এটি ধরে নেওয়া হয়। সেই ক্ষেত্রে আপনারা কেবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে টেলিভিশন চ্যানেল পৌঁছে দিচ্ছেন। আগে শুধু শহরে সীমাবদ্ধ ছিল, এখন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও কেবল নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয়েছে। এক্ষেত্রে আপনারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তবে আমাদেরকে একটি জিনিস মনে রাখতে হবে, যে যে কাজের জন্য লাইসেন্স নিয়েছেন তাদেরকে লাইসেন্সের সেই শর্ত মানতে হবে। লাইসেন্সের শর্তগুলো সবাই সঠিকভাবে যদি পালন করে তাহলে এই খাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় না। লাইসেন্সের শর্ত সবার মানা প্রয়োজন।'
হাছান মাহমুদ বলেন, 'কেবল নেটওয়ার্ক পরিচালনার জন্য যারা লাইসেন্স নিয়েছেন, তারা শুধু কেবল নেটওয়ার্কই পরিচালনা করবেন। সেখানে অন্য কিছু করার সুযোগ নাই। সেখানে বিজ্ঞাপন দেখানোর সুযোগ নাই, সিনেমা দেখানো বা অন্য কোন অনুষ্ঠান দেখানোর সুযোগ নাই।'
কেবল নেটওয়ার্কে স্থানীয় বিজ্ঞাপন সম্পর্কে তিনি বলেন, 'অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন স্থানে কেবল নেটওয়ার্কে স্থানীয় বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, যেটি লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী করা যায় না। তারপরে সেখানে অনেক সময় সিনেমা চালানো হয়, গানের অনুষ্ঠান চালানো হয়, যেটি লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী করা যায় না।'
সরকারি টিভি চ্যানেলগুলোকে সিরিয়ালে সামনে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, 'সরকারের পক্ষে থেকে একটি আহ্বান জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোকে সামনে রাখতে হবে। প্রথমে সরকারি চ্যানেল। বিটিভির চারটি চ্যানেল- বিটিভি, বিটিভি ওয়ার্ল্ড, সংসদ টিভি এবং বিটিভি চট্টগ্রাম। এগুলো প্রথমে এরপর বাংলাদেশের অন্য চ্যানেলগুলো প্রতিষ্ঠার সময় ধরে সিরিয়ালে রাখতে হবে, সেটি অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয় না।'
তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'অনুরোধ জানাব আপনাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সবাইকে অতিসত্বর জানিয়ে দেওয়া হোক, লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী যে কাজগুলো করতে পারেন তার বাইরে যেন কেউ কোনো কার্যক্রম না করেন। আপনাদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কোনো বিজ্ঞাপন না দেখানো, আপনাদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নিজস্ব কোনো অনুষ্ঠান না দেখানে। বাংলাদেশি চ্যানেলগুলোকে সিরিয়ালি রাখা। এ কাজগুলো করলে আমি মনে করি যে বিশৃঙ্খলা তাকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে পারেন। আপনাদের যেসব সদস্যরা এখনও সঠিকভাবে নিয়ম পালন করছেন না, তাদেরকে জানিয়ে দিন। আমারা আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করে একটা সময়সীমা নির্ধারণ করে দেব, সেই সময়সীমার পরে যদি কেউ লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে কাজগুলো করে তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'ডাউনলিঙ্ক করে যে দুটি প্রতিষ্ঠান তাদের নোটিস দিয়েছিলাম, তারা প্রাথমিক জবাব দিয়েছে, পূর্ণাঙ্গ জবাব দিতে দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছে সেই সময় দেওয়া হয়েছে, সেটি এখনও শেষ হয়নি। আমি অনুরোধ জানাব বিদেশি চ্যানেলে কোনো বিজ্ঞাপন যাতে প্রদর্শিত না হয় এক্ষেত্রেও আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।'