ছয় বছর আগে সাভারের রানা প্লাজা ধসে একমাত্র ছেলে মাসুদকে হারিয়েছিলেন মাকসুদা খাতুন। এরপর থেকে দিশেহারা হয়ে পরেন তিনি। সংসারের একমাত্র আলোর প্রদীপ নিভে যাওয়ায় সংসার চালাতে তাকে এখন ঘুরতে হচ্ছে অন্যের দ্বারে দ্বারে।
জানা গেছে, মাকসুদা খাতুনের একমাত্র ছেলে মাসুদ সাভারের রানা প্লাজার ৭ তলায় ফিনিশিং অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। মাসুদের সামান্য বেতনেও সংসারে স্বচ্ছলতা ছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ওই সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় পরদিন মৃত্যুপুরী থেকে মাসুদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, সন্তান হারানোর ৬ বছর পার হলেও কাজের জন্য কেঁদে বেড়ান মাকসুদা। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রানা প্লাজার সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘একমাত্র সন্তানই ছিল আমার ঘরের প্রদীপ। এখন আর প্রদীপ জ্বালানোর কেউ নেই। আমাদের দেখার কেউ রইলো না।’
এ সময় ছেলের স্মৃতিচারণ করে তিনি আরও বলেন, ‘ছেলে মারা যাওয়ার পর সংসারে স্বচ্ছলতা নেই। দু’মুঠো ভাত জোগাড় করতে চাকরির জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় মোট এক হাজার ১৩৫ জন নিহত হন। যাদের মধ্যে রংপুরের ২৬ জন পোশাক শ্রমিক নিহত হয়। এর মধ্যে বদরগঞ্জে ১৮ জন, মিঠাপুকুরে ৭ এবং রংপুর সদর উপজেলার এক জন রয়েছেন। আর আহত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল দুই হাজার ৪৫৮ জন। যাদের মধ্যে রংপুরের পোশাক শ্রমিক ছিল অর্ধশতাধিক। যাদের বেশির ভাগই এখনও পেটের তাগিদে রাজধানীতে পড়ে আছেন।