সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি, গরমে নাভিশ্বাস খুলনার জনজীবনে

খুলনা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট খুলনা বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 12:31:40

বৈশাখের শুরু থেকেই খুলনায় গরমে ত্রাহি অবস্থা। সূর্যের উদয় থেকেই তেজদীপ্ততা শুরু হয়, সেই থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তীব্র তাপদাহে নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে খুলনার জনজীবনে। শুধু তাই নয় রাতেও ভ্যাপসা গরমে হাঁপিয়ে উঠছে খুলনার মানুষ। দিনের বেলা রোদের তাপের কারণে স্বাভাবিক কাজকর্মেও বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না অনেকেই।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্র‌িল) বইছে চলতি বছরের এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্র‌ি সেলসিয়াস। বাতাসে যেনো আগুনের তাপ। কোথাও স্বস্তি নেই। মাঠ-ঘাট ফেটে চৌচির। টানা কয়েকদিনের তাপদাহে জনজীবনে নেমে এসেছে সীমাহীন দুর্ভোগ। দিনে যেমন রোদের খরতাপ তেমনি রাতে বইছে গরম হাওয়া। বর্ষার পরিবর্তে প্রখর তাপদাহের অস্বস্তিতে পড়েছে সব পেশার মানুষেরা। দিনের বেলায় শিশুরা গরম থেকে বাঁচতে জলকেলিতে মত্ত থাকছে।

এদিকে, তাপমাত্রা এমনই থাকবে আরও বেশ কয়েকদিন। কমার পরিবর্তে আরও দু' এক ডিগ্র‌ি বাড়তে পারে এমনটি জানিয়েছে আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিদফতর।

অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিরুল আজাদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘খুলনা অঞ্চলে বর্তমানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ খুলনাসহ আশপাশের এলাকায় ৩৭ ডিগ্র‌ি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী আরও কয়েকদিন এ গরমের তীব্রতা থাকবে। এক বা দুই ডিগ্র‌ি তাপমাত্রা বাড়তেও পারে। এরপর এ মাসের শেষের দিকে বৃষ্টিপাত হতে পারে।’

এছাড়া নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক ঘুরে দেখা যায়, দুর্বিষহ গরমে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা অসুখ ও অসুস্থতায়। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসছে সবাই। এর ভেতরে গরমে বেশি অসুস্থ হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অধিকাংশই হিট স্ট্র‌োক, ডায়রিয়া, পানিশূন্যতা ও গরমে অসুস্থ হওয়া রোগী।

খুলনা শিশু হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কামরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘গত কয়েকদিন যাবত গরমের কারণে শিশুদের চাপ বেড়েছে। গরমে অসুস্থ হওয়া শিশুদের চিকিৎসা করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখন শিশুদের পানিশূন্যতা ও ডায়রিয়া বেশি হচ্ছে। এ সময় শিশুরা পানি শূন্যতা রোগে সবচেয়ে বেশি ভোগে তাই প্রচণ্ড গরম কিংবা রোদ থেকে যতটুকু সম্ভব শিশুদের নিরাপদে রাখতে হবে পাশাপাশি বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একই সঙ্গে সড়কের পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খোলা আকাশে কিংবা ফুটপাতে বিক্রি করা শরবতসহ অন্যান্য খোলা খাবার খেয়েও পেটের পিড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।’

শিশু থেকে শুরু করে সবাইকে ফুটপাতের খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন এ চিকিৎসক।

শ্রমজীবী খেটে-খাওয়া সাধারণ মানুষেরা প্রখর রোদেও কাজ করতে গিয়ে পানির তেষ্টায় হাতের নাগালে অস্বাস্থ্যকর ঠাণ্ডা শরবত খেয়ে তৃষ্ণা মেটাচ্ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি। দিনের বেলায় দাবদাহ থেকে বাঁচার জন্য মাথায় ছাতা নিয়ে পথ চলতে হচ্ছে মানুষকে। গরমে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তাদের পড়ালেখায় সমস্যা হচ্ছে।

সবার ধারণা করছে বৃষ্টি হলেই তীব্র গরমের এ দৈন্যদশা থেকে মুক্তি পাবে সবাই। তবে কৃষকরা চাইছেন এ মৌসুমের ধান কাটার পরে বৃষ্টিপাত হলে তাদের উপকার হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর