খেলাধুলার উৎকর্ষ সাধনে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘খেলাধুলায় আরো বেশি উৎকর্ষতা অর্জন হোক, সেটাই আমি চাই। আর এ জন্য যা প্রয়োজন, সরকারের পক্ষ থেকে আমি তা করব।’
শনিবার (২৭ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ -২০১৯’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
খেলাধুলার সঙ্গে নিজের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমার দাদাও খেলতেন। তিনি ফুটবল খেলতেন। আমার বাবাও ফুটবল খেলতেন। আমার ভাই কামাল মুক্তিযোদ্ধা, আমার ভাই জামাল সেও মুক্তিযোদ্ধা। কামালের স্ত্রী সুলতানা, সে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রী। ইউনিভার্সিটির ব্লু ছিল, সেও স্পোর্টসে। জামালের স্ত্রীও খেলাধুলায় ছিল। মূলত আমাদের পরিবার সব সময় খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। আধুনিক ফুটবল গড়ে তোলা, আবাহনী ক্রীড়া চক্র গড়ে তোলা, এ প্রত্যেকটা পদক্ষেপ শেখ কামাল নিয়েছিল।’
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী যারা খেলাধুলায় বিশেষ দক্ষতা প্রদর্শনে সক্ষম হতেন তাদেরকে ব্লু উপাধিতে সম্মাননা দেওয়া হত।
শেখ আরো হাসিনা বলেন, ‘খেলাধুলা শরীর চর্চার মধ্য দিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েদের যেমন শারীরিকভাবে সুস্থতা পাবে, মানসিকভাবে শক্তি পাবে, মেধাবিকাশের সুযোগ পাবে। সেকারণেই আমরা এ উদ্যোগটা নিয়েছি।’
জাতির জনকের শাসনামলের কথা স্মরণ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলে, দেশকে যখন সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমি ও আমার ছোট বোন বিদেশে ছিলাম, আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম। তবে এ বাঁচা বড় কষ্টের, বড় দুঃখের। তারপরও আমরা প্রতিজ্ঞা নিয়েছিলাম, আমরা যখনই সুযোগ পাব, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করব।’
ক্রীড়া ক্ষেত্রে দেশের ছেলেমেয়েরা যেন আরো বেশি দক্ষতা অর্জন করতে পারে তার জন্য সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মূলত ৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত অনেকগুলো পদক্ষেপ আমরা নিয়েছিলাম কিন্তু তা সম্পূর্ণ করতে পারিনি। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে তা সম্পূর্ণ করি। ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত আমরা একটানা প্রায় ১০ বছর সরকারে আছি, আমাদের প্রচেষ্টা হচ্ছে, শিক্ষা, ক্রীড়া, সংস্কৃতি চর্চা প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের তরুণ সমাজ, যুব সমাজ, শিশু সকলেই সম্পৃক্ত হবে এবং নিজেদের সম্পূর্ণভাবে গড়ে তুলবে।’
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘খেলাধুলায় হার-জিত থাকবেই। এতে মন খারাপ করার কিছু নেই। আজ হারলে কালকে জিতব, এ কথাটাই মনে রাখতে হবে। কারণ জাতির পিতা নিজেকে সব সময় সেভাবে গড়ে তুলেছেন যে, সর্বক্ষেত্রে হার না মানা, এটাই ছিল তার লক্ষ্য। যেকারণে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম।’
ভবিষ্যতে আন্তঃকলেজ প্রতিযোগিতা করা ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে তরুণ ও যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে চ্যাম্পিয়নশিপে বিজয়ী ও রানার্সআপ দলকে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।