থানায় নিরাপত্তা চাওয়ার ৯ দিনের মাথায় ছাত্র খুন

ময়মনসিংহ, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ময়মনসিংহ, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 07:12:35

জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়রি করার ৯দিন পর প্রাণ হারাতে হয়েছে টাঙ্গাইল সরকারি মাওলানা মোহাম্মদ আলী (এমএম আলী) কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মাজহারুল ইসলাম মাসুম (২৪)। সে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার নামাপাড়া গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে।

গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) গভীর রাতে শহরের থানাপাড়া শান্তিকুঞ্জ এলাকার একটি মেস থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনাকে পুলিশ আত্মহত্যা বললেও নিহতের পরিবার এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করছে এবং এ বিষয়ে হত্যা মামলা করতে চাইলে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।

রোববার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে ত্রিশাল প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন নিহত মাসুমের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন।

তিনি বলেন, ‘এটা আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। বেশ কয়েকদিন ধরেই আমার ভাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডিও করা হয়েছিল। কিন্তু প্রাণ রক্ষা হয়নি আমার ভাইয়ের। তাকে হত্যা করে রুমে আটকে রাখা হয়েছিল। এরপর পুলিশকে আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা নিতে বললেও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া মামলা নিতে পারবেনা বলে অপমৃত্যুর ডায়েরি করেছি। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচার দাবি করছি।’

নিহতের পরিবার জানায়, গত ১৭ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল সদরের মুন্সিপাড়া এলাকার স্থানীয় মাহফুজ নামে এক যুবক ফোন করে মাসুমের মোবাইলে। এসময় মাসুমকে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দেয় মাহফুজ। পরে বিষয়টি মাসুম তার বড় ভাই মামুন ও কলেজের ভিপি ফাখরুল আলম মুকুলকে জানালে তারা তাকে থানায় জিডি করার পরামর্শ দেন। পরে ওই রাতেই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন মাসুম।

এর ৯দিন পর গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে মেস মালিক শফিক পুলিশকে মাসুমের আত্মহত্যার খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ কক্ষ থেকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সেখানে তার স্বজনরা মাসুমের হাতে ও গলায় স্কচস্টেপ মোড়ানো দেখতে পেয়ে মাসুমের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে চান। কিন্তু পুলিশ হত্যা মামলা না নিয়ে অপমৃত্যু ডায়রি করে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার ব্যাপারে ধারণা করলেও তদন্ত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।

টাঙ্গাইলের এমএম আলী কলেজের ভিপি ফাখরুল আলম মুকুল জানান, মাসুম পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে কলেজের আশপাশের এলাকার রিকশা-ভ্যান চালক ও দিনমজুরদের ছেলে-মেয়েকে স্কুলগামী করতে কাজ করত। এছাড়াও সে নানা সামাজিক কাজে জড়িত ছিল। মাসুম একটি অনলাইন পত্রিকায় কাজ করার পাশাপাশি টাঙ্গাইল জেলায় ময়মনসিংহ বিভাগীয় স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতিও ছিল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর