রংপুরের বদরগঞ্জে ধাপপাড়া বধ্যভূমিতে নির্মাণাধীন মৃক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে করে স্মৃতিস্তম্ভে উঠার কয়েক সিঁড়ির পলেস্তারা ধসে গেছে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে সিঁড়ির বেহাল দশা দেখে স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসনসহ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, বদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের শহীদ শাহাজাহান মোড় সংলগ্ন ধাপপাড়া বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণ কাজ চলছে। স্মৃতিস্তম্ভের উপরে উঠার জন্য ব্যবহৃত সিঁড়ি রাতের অঁধারে কে বা কারা ভাঙচুর করেছে। এতে পলেস্তারা উঠে যাওয়ায় স্মৃতিস্তম্ভে উঠার পাঁচটি সিড়িতে ব্যবহৃত বালু ও সিমেন্ট সরে গেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপশক্তি এই ভাঙচুর চালাতে পারে বলে ধারণ করছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। তবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে নির্মাণাধীন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে ন্যাক্কারজনক এই ভাঙচুরের সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটি।
মুক্তিযোদ্ধা মোখলেছুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দালালরা মিলে ধাপপাড়া বধ্যভূমিতে অন্তত ২০-২৫ নিরীহ নিরস্ত্র মুক্তিকামী বাঙালিদের হত্যা করে। হাদানার বাহিনী ১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল এখানে গণহত্যা চালায়। শহীদের রক্তে ভেজা বধ্যভূমিকে ঘিরে নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করতে এখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজ হচ্ছে। কিন্তু দুর্বৃত্তরা যেভাবে ভাঙচুর করেছে, তা দুঃখজনক।’
অন্যদিকে বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো সকালে মিস্ত্রিরা কাজ করতে এসে ভাঙা সিঁড়ি দেখতে পেয়ে আমাদের খবর দেন। আমরা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরকে বিষয়টি অবগত করেছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ভাঙচুরকারীদের আইনের আওতায় আনা হোক।’
এ ব্যাপারে বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রশিদুল আলম বার্তা২৪.কম-কে জানান, ‘বধ্যভূমির উপর নির্মাণাধীন স্মৃতিস্তম্ভে ভাঙচুরের ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’