ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ শূন্য করা হচ্ছে। বন্দর থেকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মাদার ভ্যাসেল ও লাইটারেজ জাহাজ গুলোকে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল থেকে জেটিতে কোনো পণ্য ওঠানো-নামানো হয়নি। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নৌপথে পণ্য পরিবহণ বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি থেকে শিপ টু শোর ক্রেন, গ্যান্ট্রি ক্রেন, আরটিচি, স্ট্যাডেল ক্যরিয়ার অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পণ্যভর্তি কনটেইনারও নিরাপদে রাখার চেষ্টা চলছে।’
লাইটারেজ জাহাজে শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি বশির শেখ বার্তা২৪.কমকে জানান, ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড় ফণী থেকে বাচাঁর জন্য লাইটারেজ জাহাজে পণ্য উঠানো-নামানো বন্ধ রয়েছে। গভীর সমুন্দ্র থেকে জাহাজকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) এনামুল করিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বহির্নোঙর থেকে মাদার ভেসেল সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড় ফণী থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি কনজার্বেটর ক্যাপ্টেন ফরিদ উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বন্দর থেকে ছোট জাহাজ গুলোকে কালোঘাট এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বড় জাহাজকে মাতামবাড়ি বন্দরের দিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, শক্তশালী ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবে মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
অপরদিকে কক্সবাজার সমূদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৯০-১১০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।