ঘরে বসেই মিলবে রাজউকের নকশা অনুমোদনসহ ছাড়পত্র

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 06:42:25

ঢাকা: ভবনের নকশা অনুমোদনসহ ছাড়পত্র নিতে আর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (রাজউক) যাওয়ার দরকার হবে না। অফিস ম্যানেজ করার দিন শেষ, এখন ঘরে বসেই যে কোনো জায়গার নকশা অনুমোদনসহ ছাড়পত্র নেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, দীর্ঘসূত্রিতা আর হয়রানি অবসানে সহজীকরণের মাধ্যমে শুরু হলো দ্রুত সেবা পাওয়ার যুগান্তকারী পরিবর্তন। এখন টেবিলে টেবিলে ধরনা দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে না। এর পরিবর্তে বাসায় কিংবা যে কোনো জায়গায় বসে নকশা অনুমোদনসহ ছাড়পত্র ও অন্যান্য সেবা অনলাইনেই পাওয়া যাবে।

বৃহস্পতিবার (০২ মে) রাজউকের ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র ও নির্মাণ অনুমোদন অটোমেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, সারা দুনিয়া এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। সারা দুনিয়া এখন হাতের মুঠোয়। এই হাতের মুঠোয় আনার পদ্ধতি বাংলাদেশে চালু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশনায় তারই সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় কার্যত বাংলাদেশকে আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে কেন মন্ত্রণালয় পিছিয়ে থাকবে? মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দপ্তর সংস্থা পিছিয়ে থাকবে? সেই প্রশ্ন আমার মনে জাগিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, তোমার প্রথম কাজ হবে কর্মের পরিবেশ গতিশীল করা, স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা এবং জনবান্ধব করা।

দীর্ঘসূত্রিতার যন্ত্রণা সেবা গ্রহীতারা বোঝেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশের মালিক জনগণ, আমরা জনগণের সেবক। মালিকদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া শেখ হাসিনা সরকারের লক্ষ্য। আমরা আজ যুগান্তকারী পরিবর্তনের যে ধারা সূচনা করলাম, সেটা এখানে শেষ হবে না, এটা চলমান প্রক্রিয়া।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, রাজউকের সিটিজেন চার্টার বড় হরফে টানানো থাকবে। সেবা গ্রহণে একটা সময় নাগরিকের যে সময় লাগতো, সেখান থেকে যে উত্তরণ হয়েছে সেটা মানুষকে জানতে হবে। সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কি কি স্তরে নাগরিকদের সুবিধা দেওয়া আছে, সেটা তাকে জানতে হবে। যারা কিছু বোঝেন না, তাদের জন্য হেল্প ডেস্ক থাকবে। রাজউকের আটটি জোনের প্রতিটিতে এক্সপার্ট টিম থাকবে। কেন মানুষ সেবা পাবে না, কেন রাজউকের নানা সমালোচনা হবে। সেই সমালোচনার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আজ আমরা এ কর্মসূচি নিয়েছি। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ই সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তর-সংস্থার আগে এ আটোমেশনের পরিকল্পনা করেছে এবং কাযকর করছে।

সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পদ্মাসেতু ও কর্ণফুলি টানেল নিয়ে অযাচিত মন্তব্যের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যও শুনতে হয়। বিএনপি মহাসচিব বলছেন, কর্ণফুলী টানেল, পদ্মাসেতু অপ্রয়োজনীয়। আমার কাছে মনে হয়, মানুষ যখন উদ্ভ্রান্ত হয়, রাজনীতির চূড়ান্ত দেউলিয়াপনায় পৌঁছে যায়, তখন বোধ হয় নিজের অস্তিত্বের শিকড় শূন্যে খোঁজে। দেউলিয়াপনার ভেতর থেকে বিএনপি বাংলাদেশের উন্নয়ন চোখে দেখে না।

রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার চেয়ে বিত্ত-বৈভব বড় নয়। চিত্তকে বিত্তবান করেন। নৈতিকতাকে বড় করেন, মূল্যবোধকে বড় করেন। আসুন আমরা সবাই মিলে শুধু দৃশ্যমান উন্নয়ন নয়, নীতি-নৈতিকতায়, মূল্যবোধে উন্নত হই।

রাজউকের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আখতার হোসেন এবং মো. ইয়াকুব আলী পাটওয়ারী, রাজউকের সদস্য ও অন্যান্য কর্মকরাতারা।

একজন গ্রাহক অনলাইনে ঢুকেই দেখতে পারবেন, তার আবেদন কোন পর্যায়ে আছে। আর এ জন্য গ্রাহককে http://cp.rajukdhaka.gov.bd/ ওয়েব সাইটে প্রবশ করে একবার মাত্র রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এর মাধ্যমে সেবা পাওয়ার জন্য গ্রাহকের আগের চেয়ে অনেক সময় ও খরচ বাঁচবে। আবেদন করতে গিয়ে কোনো সমস্যা হলে হট লাইন ০১৯৯২-০০০৬৬৬ নম্বরে সকাল ৯টা থেকে ‍বিকেল ৫টা পর্যন্ত ফোন করলে সমাধান পাওয়া যাবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর