৩৮ বছর ভোটযুদ্ধ করে অবশেষে জয়লাভ

ময়মনসিংহ, জাতীয়

উবায়দুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ | 2023-08-31 21:10:30

ভোটভাগ্য বরাবরই সহায় হয়নি তার। টানা ছয়বার কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সহায়-সম্বল হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে স্ত্রীও ছেড়ে চলে গেছেন প্রায় দেড় যুগ আগে। কিন্তু নাছোড়বান্দা তিনি। জীবনের শেষ দিনে হলেও নির্বাচনে জিতিয়ে দেখাবেন, এমন পণ ছিল তার।

এভাবেই কেটে গেছে ৬৩টি বসন্ত। জীবনের গোধূলি সময়ে ভোটভাগ্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ভোটাররা তার পক্ষেই রায় দিয়েছেন। তিনি শীতল সরকার। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) নির্বাচনে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

৩৮ বছরের অমোঘ সাধনা শেষে বিজয়ের হাসিতে ফেটে পড়েন শীতল সরকার। নগরবাসীর মুখে মুখে কাউন্সিলর শীতল সরকারের নাম। দূর দূরান্ত থেকেও বহু লোক আসছেন তার সঙ্গে হাত মেলাতে। শুভ কামনায় ভরে উঠছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সব জায়গাতেই অভিনন্দন আর প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।

শীতল সরকার ভোটের রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন ১৯৮১ সালে। ময়মনসিংহ পৌরসভার কমিশনার পদে সেসময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছিলেন। একইভাবে পরাজিত হন পৌরসভার পরের পাঁচটি নির্বাচনেও। কিন্তু জেতার জেদ যার মন-মননে, কার সাধ্য আছে তাকে ঠেকিয়ে রাখার? পারেননি স্ত্রী লক্ষ্মী সরকারও।

বারবার নির্বাচন থেকে স্বামীকে দূরে রাখতে ব্যর্থ হয়ে লক্ষ্মী সরকারও নিজের পথ ধরেছিলেন। ১৮ থেকে ১৯ বছর যাবৎ বাস করছেন জামালপুরে, বাবার বাড়িতে। শীতল সরকার মাঝে মাঝে শ্বশুরবাড় যান, খোঁজ নেন একমাত্র সন্তান হিমেল সরকারের। হিমেল পড়ছে জামালপুরের একটি কলেজে।

শীতল সরকারকে ছেড়ে যাওয়ার সময় স্ত্রী লক্ষ্মী সরকার বলেছিলেন, কোনোদিন ভোটে জিতলে তাকে যেন তার বাপের বাড়ি থেকে ফিরিয়ে আনা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শীতল সরকার বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মান অভিমান থাকবেই। স্ত্রী ওই সময় হয়তো এটি বলেছিলেন। কিন্তু আমার নির্বাচনের সব খোঁজ-খবরও রেখেছেন। ক’দিন পরই শ্বশুরালয়ে যাব। স্ত্রী ও সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে আসব।’

প্রতিপক্ষ আল মাসুদকে ৬০২ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন শীতল সরকার। ওয়ার্ডের নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে নাগরিকদের সমস্যা সমাধানে মনোনিবেশ করতে চান তিনি। উন্নয়ন উপহার দিয়ে নিজেকে গেঁথে নিতে চান ওয়ার্ডবাসীর মনে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর