চট্টগ্রাম বন্দরে আরও ৪ গ্যান্ট্রি ক্রেন আসছে আগামী মাসে

চট্টগ্রাম, জাতীয়

আবদুস সাত্তার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2023-08-24 09:20:29

চীন থেকে ক্রয় করা আরও চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন যুক্ত হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের বহরে। আগামী জুন মাসেই এ চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক এ তথ্য নিশ্চিত করে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘চুক্তি অনুসারে আগামী মাসে (জুন) ক্রেনগুলো আমাদের হাতে পৌঁছার কথা রয়েছে। ক্রেনগুলো যুক্ত হলে চট্টগ্রাম বন্দরের কাজ আরও বৃদ্ধি পাবে। নতুন এ চারটি যুক্ত হলে বন্দরের গ্যান্ট্রি ক্রেন হবে ১০টি।’

তিনি জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার উঠানো-নামানোর জন্য আধুনিক শিপ টু শোর (এসটুএস) গ্যান্ট্রি ক্রেন রয়েছে ছয়টি। গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে দুই দফায় তিনটি করে ছয়টি গ্যান্ট্রি ক্রেন যুক্ত হবার পর কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের চিত্র পাল্টে গেছে। গত বছরের আগস্টে সরকারের সাথে চীনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের চুক্তি অনুযায়ী ক্রেনগুলো যুক্ত হবে। এছাড়া ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে রেল মাউন্টেড গ্যান্ট্রি ক্রেন কিনেছে বন্দর  কর্তৃপক্ষ।

গ্যান্ট্রি ক্রেন/ ছবি: বার্তা২৪.কম

 

গ্যান্ট্রি ক্রেনের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘২৩৮ কোটি ৬১ লাখ ৫২ হাজার টাকায় ৪০ টন ধারণ ক্ষমতার চারটি ‘কিউ গ্যান্ট্রি ক্রেন’ চীন থেকে আনা হচ্ছে। চীনের সাংহাই জেনহুয়া হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি এসব গ্যান্ট্রি ক্রেন সরবরাহ করছে।’

এর আগে ৩৪৫ কোটি টাকায় চীনের একই প্রতিষ্ঠান থেকে ছয়টি গ্যান্ট্রি ক্রেন সংগ্রহ করেছে সরকার।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, কনেটেইনার উঠানো-নামানোয় সবচেয়ে কার্যকর ইকুইপমেন্ট হলো কিউ গ্যান্ট্রি ক্রেন। চট্টগ্রাম বন্দরে ২৫টি কিউ গ্যান্ট্রি ক্রেনের প্রয়োজন হলেও গত ১৫ বছর ধরে ছিল মাত্র চারটি। এই চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেনের মধ্যে দুর্ঘটনার কারণে প্রায় দুই বছর অচল ছিল দুটি। ২০০৫ সালে জাপানের মিতসুবিসি থেকে নেওয়া এসব গ্যান্ট্রি ক্রেনের মেয়াদ শেষ হবে ২০৩০ সালে। পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকার কারণে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস ও জাহাজীকরণে সময় বেশি লাগছে বলে বন্দর ব্যবহারকারীরা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল জুলফিকার আজিজ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বন্দরের পণ্য দ্রুত খালাসের জন্য ইকুইপমেন্ট খুবই জরুরি। তাই বন্দরের উন্নয়নের জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেই সাথে সংযোজন করা হচ্ছে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি।’

চট্টগ্রাম বন্দর/ ছবি: সংগৃহীত

 

বন্দর ব্যবহারকারীদের সংগঠন চিটাগাং চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদায় কনটেইনার হ্যান্ডেলিং বেড়ে যাচ্ছে। এই বাড়তি কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য ইকুইপমেন্টের পাশাপাশি নতুন নতুন ইয়ার্ড চালু করতে হবে। এখন আরও চারটি কিউ গ্যান্ট্রি ক্রেন আসছে তা সুখবর, তবে এগুলো দ্রুত বন্দরে অপারেশনের কাজে লাগাতে হবে।’

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২০১৪ সালে ১৭ লাখ ৩১ হাজার ২১৯, ২০১৫ সালে ২০ লাখ ২৪ হাজার ২০৭, ২০১৬ সালে ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ৯০৯ , ২০১৭ সালে কনটেইনার উঠানো-নামানো হয়েছে ২৬ লাখ ৬৭ হাজার টিইইউস। ২০১৮ সালে কনটেইনার উঠানামা হয়েছে ২৯ লাখ তিন হাজার টিইইউস। ২০১৯ সালে ৩০ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডেলিং ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করছে চট্টগ্রাম বন্দরে কর্মকর্তারা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর