রবীন্দ্রনাথ বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত রূপকার: শিক্ষামন্ত্রী

ঢাকা, জাতীয়

Shadrul Abedin | 2023-08-26 12:48:48

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালি সংস্কৃতির চিরায়ত রূপকার উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৫৮ বছর আগে এবং প্রয়াতও হয়েছিলেন প্রায় ৮০ বছর আগে। তারপরও আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে তিনি ভীষণ প্রাসঙ্গিক।’

বুধবার (৮ মে) বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর আয়োজন করে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-অনুভূতিতে তিনি নিত্য বিরাজমান। সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে রবীন্দ্রনাথের পদচারণা ছিল না। তিনি লিখেছেন, তিন হাজারের বেশি গান, এঁকেছেন দুই হাজারের বেশি চিত্রকর্ম। সৃষ্টি প্রয়াসে তিনি নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্যাসিবাদের ক্রমাগত ঔদ্ধত্যে রবীন্দ্রচিত্তে তুলেছিল আলোড়ন। রবীন্দ্রনাথ সাম্প্রদায়িকতা, সংকীর্ণতা ও উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। তিনি ছিলেন মানবতার অগ্রপথিক। বাংলাদেশের নিসর্গ প্রকৃতি তাঁকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করেছিল। তাঁর সৃষ্টিশীল জীবনের বড় একটি অংশ কেটেছে এ বাংলার মাটিতে।’

দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের এমন পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা উচিত যা শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে ভূমিকা রাখে। যান্ত্রিক ও প্রাণহীন শিক্ষার বদলে আমরা চাই আনন্দময় শিক্ষা যা রবীন্দ্র শিক্ষা চেতনার সঙ্গে সাযুজ্য পূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল শিল্প-সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে পাচ্ছি। কিন্তু তিনি তার চেয়েও অনেক বড় মাপের ব্যক্তিত্ব। তাঁর সমাজ ভাবনা, পল্লী উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ঋণ, কৃষি ভাবনা প্রভৃতি থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত, যা এ যুগেও সমানভাবে প্রযোজ্য।’

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ একই সঙ্গে বাঙালি, ভারতীয় ও বিশ্ব নাগরিক। তিনি প্রথম দিকে জাতীয়বাদের সমর্থক হলেও পরে বিশ্ববাদের সমর্থক হয়ে যান। রবীন্দ্রনাথের মানবিক বিশ্বে সকলের অধিকার রয়েছে।’

রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী, লেখক, গবেষক ও সংগঠক অধ্যাপক সনজীদা খাতুন বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথের মানবিকতাবোধের কারণে তার প্রতি আমাদের বিশেষ আকর্ষণ। তিনি দেখিয়েছেন যে প্রেম সবার উপর। এই প্রেম মানবিকতার প্রেম। প্রাণের প্রেম।’

সভাপতির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বাবু বলেন, ‘বরেণ্য ব্যক্তিদের জীবনে কমবেশি অভিমান থাকে। মায়ের সান্নিধ্য তেমন পাননি বলে রবীন্দ্রনাথের একটি অভিমান ছিল। কেননা তখন ঠাকুরবাড়ির রেওয়াজ ছিল ধাত্রীদের মাধ্যমে সন্তানদের লালন-পালন।’

অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র স্মারক বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর