সড়ক নিরাপত্তায় বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ দাবি

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-24 23:32:47

সড়ক নিরাপত্তার স্বার্থে বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন তৎপরতা দেখা গেলেও জাতীয় বাজেটে তার প্রতিফলন হয় না। দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য অর্থনৈতিক কোনো কোড নেই। তাই এবারের বাজেটে একটি অর্থনৈতিক কোড চালুসহ সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চালকদের প্রশিক্ষণ, জনসচেতনতা সৃষ্টি, আক্রান্তদের উদ্ধার, চিকিৎসা সহায়তা ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা তথা ক্ষতিপূরণ দিতে জাতীয় বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার দাবি করেছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) পঞ্চম বিশ্ব নিরাপদ সড়ক সপ্তাহ উপলক্ষে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত ‘নিরাপদ সড়ক: আমাদের দায়িত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা আনতে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হলো- আইন না মানার প্রবণতা। ক্ষমতাবানরাই আইন ভাঙছেন। ফলে দুর্ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা বাড়ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য নাগরিকদের মধ্যেও আইন মানার সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি। শুধুমাত্র এনফোর্সমেন্টের মাধ্যমে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

মূল প্রবন্ধে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বিশ্বব্যাপী সড়ক নিরাপত্তা এখন প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে, প্রতিবছর সারা বিশ্বে ১.২ মিলিয়ন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। আহত হয় ২০ থেকে ৫০ মিলিয়ন মানুষ। সংস্থাটির হিসাব মতে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে হতাহতের সংখ্যা (প্রতি ১ লাখ মানুষে যথাক্রমে ২১.৫ ও ১৯.৫ জন)। যা উচ্চ আয়ের দেশগুলোর (১০.৩ জন) তুলনায় অনেক বেশি। লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হলো, সারা বিশ্বে নিবন্ধিত যানবাহনের মাত্র ৪৮ শতাংশের শেয়ার নিয়ে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনার দায় কাঁধে নিতে হচ্ছে। গত ৪ থেকে ৫ দশক ধরে উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার হ্রাস পেলেও এসব দেশে এখনও সড়ক দুর্ঘটনাকে মৃত্যু, আঘাত ও পঙ্গুত্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সংস্থাটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্তের ৪৮ শতাংশ পথচারী, সাইক্লিস্ট ও মোটরসাইক্লিস্ট। যাদের ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক ব্যবহারকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে এদের মৃত্যুর সংখ্যা আরো বেশি।

মূল প্রবন্ধে আরো বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনার ক্ষতির পরিমাণ বা ভয়াবহতা নির্ভর করে গাড়ির গতিসীমার ওপর। আমাদের দেশের মহাসড়কগুলো আন্তর্জাতিক মানের নয়। এসব সড়কে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানোর সুযোগ-সুবিধা থাকলেও চালানো হচ্ছে ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিবেগে। ফলে প্রাণহানি ও সম্পদহানি বেশি হচ্ছে। বেশি গতির কারণে সংঘর্ষে গাড়ির সিলিন্ডার পর্যন্ত বিস্ফোরিত হচ্ছে। তাতে প্রাণহানির ভয়াবহতা বাড়ছেই।

সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক আবদুল হক, নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ, বিআরটিএ’র রোড সেইফটি শাখার সহকারী পরিচালক মো. নেয়ামত উল্ল্যা লেনিন, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান, ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের সিনিয়র আরবান প্ল্যানার তপন কুমার নাথসহ অনেকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর