রমজানে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না পণ্যের দাম!

ঢাকা, জাতীয়

মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 10:25:17

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতীয় ও ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে পণ্যভেদে মূল্যছাড় দেওয়া হলেও উল্টো চিত্র লক্ষ্য করা যায় বাংলাদেশে। বিশেষ করে রমজান মাসে অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে পণ্যের দাম। রমজানে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ক্রেতাদের বাধ্য হয়ে বেশি দামে পণ্য কিনতে হয়।

ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রমজান মাসে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা, যা অনৈতিক।

রোজার শুরুর দিন থেকে গত ১১ মে পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মূল্য তালিকা করে দেওয়া হলেও তা মানছেন না ব্যবসায়ীরা। আর যারা তালিকা টাঙিয়ে রেখেছেন তারা সে অনুযায়ী পণ্য বিক্রি করছেন না। এছাড়া অভিযানের আগাম খবর পেলে তড়িঘড়ি করে তালিকা টাঙানোও হচ্ছে। বিশেষ করে মাংসের বাজার বেশি অনিয়ন্ত্রিত।

ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) রমজান উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৫২৫ টাকা, বিদেশি গরুর মাংস ৫০০ টাকা, মহিষের মাংস ৪৮০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ টাকা এবং ভেড়ার মাংস ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। যা আগামী ২৬ রমজান পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

তবে রাজধানীর বাজারগুলোতে সরেজমিনে উল্টো চিত্র দেখা গেছে। নির্ধারিত মূল্য তালিকা না মেনে বেশি দামে মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এ চিত্র শুধু মাংসের বাজারেই নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারেও একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।

জানা গেছে, রমজানের শুরু থেকেই ভেজাল ও অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে র‌্যাব, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপি, দুই সিটি করপোরেশন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানে অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রির দায়ে মোটা অংকের অর্থদণ্ড করা হচ্ছে। তারপরও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না পণ্যের দাম।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল বার্তা২৪.কমকে জানান, দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন ৪-৫টি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যারা নির্ধারিত মূল্য তালিকা মানছেন না, তাদের অর্থদণ্ড করা হচ্ছে। তবে কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। তারা সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ক্রেতারা আরও সচেতন হলে পণ্যের দাম সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বেশি মূল্য চাইলে ক্রেতারা আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে পারবেন। অভিযোগ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বার্তা২৪.কমকে জানান, রমজান শুরু হলেই ভেজাল খাদ্য ও পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পরে। ব্যবসায়ীরা চাহিদার কথা মাথায় রেখে এই অনৈতিক কাজগুলো করে। প্রশাসন নিজেদের কাজ করছে। তবে অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে ক্রেতাদেরও সচেতন হতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর