বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মহানগরী এলাকায় গত দু’দিনে মোট চারটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। ফলে এসব ঘটনায় নগরীতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি আতঙ্ক বিরাজ করছে নগরবাসীর মধ্যে।
গত শনিবার (১১ মে) রাতে নগরীর বাকলিয়া থানাধীন বলীরহাট এলাকায় ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হন বোন বুবলী আক্তার (২৭)। এ ঘটনায় প্রধান আসামি শাহ আলমও একই রাতে পুলিশের সাথে ক্রস ফায়ারে নিহত হন। এছাড়া শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উত্তর কাট্টলীর বড় কালীবাড়ি এলাকায় নেশাগ্রস্ত এক ব্যক্তির এলোপাতাড়ি বঁটির কোপে খুন হন সন্ধ্যারাণী বণিক (৭০) ও একই রাতে মুরাদপুর এলাকায় ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে খুন হন মোস্তাক আহমদ (৪৫)।
জানা গেছে, শনিবার রাতে বুবলীর ভাই হাসানকে গুলি করতে সদলবলে ঘরে এসেছিল এলাকার চিহ্নিত মাদকব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী শাহ আলম। তাকে গুলি করতে উদ্যত হলে বোন বুবলী আক্তার সামনে এসে শাহ আলমকে বাধাদেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় তার বুকে ও পেটে দুই রাউন্ড গুলি লাগে। এই ফাঁকে হাসান পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বুবলীর মৃত্যু হয়। পুলিশের ধারণা পূর্ব শত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। কারণ ঘাতক শাহআলম এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত।
বুবলীর আরেক ভাই রুবেল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমার বোন শ্বশুরবাড়ি থেকে বেড়াতে এসেছিলেন। তার একটি বাচ্চাও রয়েছে। আমার বোনের কী দোষ ছিল? আমি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আবদুর রউফ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বুবলীকে গুলি করে হত্যাকারী শাহ আলমও শনিবার রাতে পুলিশের সাথে ক্রসফায়ারে নিহত হয়। এ ঘটনা বাকলিয়াথানার ওসি নেজাম উদ্দিনও গুলিতে আগত হন।’
এদিকে, উত্তর কাট্টলী বড় কালীবাড়ি এলাকায় ইয়াবা আসক্ত এক ব্যক্তির বঁটির আঘাতে নিহত হন ধীরেন্দ্র বণিকের স্ত্রীসন্ধ্যা রাণী এবং আহত হন আরও ৪ জন।
এ বিষয়ে চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক শীলব্রত বড়ুয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বঁটির কোপে আহত শান্তিনন্দী (৭০), দীপক দত্ত (৪৮), টিংকু দত্ত (৪৫) ও প্রবীর তালুকদারকে (৪০) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক)হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে টিংকু দত্তের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
অন্যদিকে, নগরীর মুরাদপুর এলাকায় ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন মোস্তাক আহমদ (৪৫) নামে এক ব্যক্তি। তিনি সাতকানিয়া উপজেলার দেওয়ান মাহমুদের ছেলে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, মোস্তাকের বড় ছেলের সাথে স্থানীয় বখাটে ছেলেদের ঝগড়া হয়। এ সময় মোস্তাক এসে ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করে। হঠাৎ এক বখাটে মোস্তাকের পেটেছুরি মরলে তিনি নিহত হন।
এ বিষয়ে সিএমপির উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘মুরাদপুরের পিলখানা এলাকার সাতকানিয়া স্টোরের সামনে কথা কাটাকাটির জেরে ছুরিকাঘাতে মোস্তাক আহমদ নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।এ ঘটনায় শাহাদাত নামে একজনকে আটক করা হয়েছে।’
সিএমপি’র কমিশনার মাহববুল রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘অপরাধের পর পুলিশ কত দ্রুত আসামি ধরতেপেরেছে সেটিই দেখার বিষয়। সম্প্রতি চট্টগ্রামে সবকটি খুনের ঘটনায় পুলিশ আসামি ধরতে সক্ষম হয়েছে। তবে একজন ক্রস ফায়ারে নিহত হয়েছে। এ সময় অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে।’