বুদ্ধ পূর্ণিমাতে পুলিশের নজিরবিহীন নিরাপত্তা

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ঢাকা | 2023-08-26 07:51:57

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমাকে ঘিরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। পুলিশ বলছে, ১৮ মে ২০১৯ অনুষ্ঠিতব্য বুদ্ধ পূর্ণিমাকে ঘিরে ইতোমধ্যে সব ধরণের নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ডিএমপি।

সম্প্রতি ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে আসন্ন শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্তে সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

সোমবার (১৩ মে) বার্তা২৪. কমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মাসুদুর রহমান।

সভায় পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়ার বরাত দিয়ে তিনি জানান, বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে ডিএমপি থেকে সুদৃঢ়, সমন্বিত ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সকল বৌদ্ধ মন্দির ও তার আশ-পাশ এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা, বৌদ্ধ মন্দির ও আশ-পাশ এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে সকল দর্শনার্থীকে ম্যানুয়ালী ও আর্চওয়ে দিয়ে তল্লাশি করিয়ে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএমপি।

এছাড়া মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য মন্দির কর্তৃপক্ষকে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে এবং তাদের আলাদা পোশাক, আর্মড ব্যান্ড বা আইডি কার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। সকল ধরণের মাদকদ্রব্য, আতশবাজি ও পটকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে ফানুস উড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। নামাজের সময় সকল ধরণের বাদ্যযন্ত্র বাজানো বন্ধ রাখতে হবে। সর্ব সাধারণের চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য মন্দিরের আশপাশে কোনো ভাসমান দোকান ও হকার বসতে দেয়া হবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে মন্দির সংশ্লিষ্ট রাস্তায় পর্যাপ্ত বেরিকেড ব্যবস্থা রাখা হবে।

সন্দেহভাজন কাউকে মন্দিরে প্রবেশের পূর্বেই তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে প্রবেশ করাতে হবে। বড় ব্যাগ, ব্যাক-প্যাক, পোটলা, ধারালো কোনো বস্তু, দাহ্য পদার্থ নিয়ে মন্দির ও অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ থাকবে। অনুষ্ঠানস্থল বোম্ব ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করানো হবে। অগ্নি নির্বাপকের ব্যবস্থা হিসেবে পর্যাপ্ত ফায়ার টেন্ডার ও দ্রুত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা হবে। মন্দিরের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয় সকল শ্রেণি পেশার প্রতিনিধি নিয়ে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন কমিটি গঠন করা হবে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। গোয়েন্দা সংস্থার অগ্রিম সংবাদ সংগ্রহপূর্বক পোশাক পুলিশকে সরবরাহ করা হবে।

শোভাযাত্রা কেন্দ্রিক নিরাপত্তা নির্দেশনায় পুলিশ কমিশনার বলেন, বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ৯ টায় বাংলাদেশ বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিষদ আয়োজিত শান্তি শোভাযাত্রা জাতীয় জাদুঘর, শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হবে।

শনিবার (১৮ মে) ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার আয়োজিত শান্তি শোভাযাত্রা ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার হতে শুরু হয়ে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম, কমলাপুর হয়ে পুনরায় ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে গিয়ে শেষ হবে।

এসময় শোভাযাত্রা শুরুর পূর্বে সকলকে তল্লাশি করে শোভাযাত্রায় প্রবেশ করানো হবে। শোভাযাত্রা শুরুর পর পথিমধ্যে কাউকে নতুন করে শোভাযাত্রায় ঢুকতে দেয়া হবে না। পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে শোভাযাত্রার চারপাশ বেস্টনি দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। শোভাযাত্রায় কোনো ধরণের ব্যাগ ও ব্যাক-প্যাক, দাহ্য পদার্থ, ধারালো বস্তু, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।

অনুষ্ঠানস্থল ও শোভাযাত্রায় অপরিচিত কোনো লোক বা অস্বাভাবিক কিছু দেখলে পুলিশকে অবহিত করাসহ বুদ্ধ পূর্ণিমার নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের তল্লাশি কার্যক্রমে নগরবাসীকে সহায়তা করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন পুলিশ কমিশনার।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর