রাজশাহীতে আম পাড়ার উৎসব শুরু

রাজশাহী, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী | 2023-09-01 21:08:25

স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় রাজশাহীর আম। কেবল দেশেই নয়, বহির্বিশ্বেও রফতানি হয় এ অঞ্চলের বিখ্যাত আম। ফলে স্বাদ নিতে রসনাবিলাসীরা যেকোনো মাধ্যমে সরাসরি পেতে চান রাজশাহীর আম।

জ্যৈষ্ঠ মাসের ১ তারিখ বুধবার (১৫ মে)। দেশে ফলের মৌসুম (মধুমাস) শুরু হয় এ মাসেই। মৌসুমের শুরুর দিনে রাজশাহীতে বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে আম পাড়ার উৎসব। আগামী দুই মাস এই অঞ্চলের চাষিরা মেতে থাকবেন এই উৎসব আমেজে।

এদিকে, রাজশাহীর রাসায়নিকমুক্ত আম খাওয়ার সুযোগ করে দিতে গত তিন বছর ধরে গাছ থেকে আম পাড়ার সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। গত ১২ মে এবারও বিভিন্ন জাতের আম পাড়ার সময় ঘোষণা করেছে প্রশাসন।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- ১৫ মে থেকে বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে বাগানের আম পাড়তে শুরু করছেন মালিক ও ব্যবসায়ীরা। তবে সেটি দেশি জাতের গুটি আম। আগামী ২০ মে থেকে গোপালভোগ আম গাছ থেকে নামাতে পারবেন চাষিরা। এছাড়া হিমসাগর বা ক্ষীরসাপাত ২৮ মে, লক্ষ্মণভোগ ২৫ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ১৬ জুন, ফজলি ও সুরমা ফজলি ১৬ জুন এবং আশ্বিনা আম পাড়া যাবে ১ জুলাই থেকে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি বছর রাজশাহীতে ১৭ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছে। দুই লাখ ১৩ হাজার ৪২৬ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ১৩ মে রাতে হঠাৎ ঝড়ে জেলার বাঘা, চারঘাট, মোহনপুর, বানেশ্বর ও পুঠিয়ায় ব্যাপক হারে আম ঝরে পড়েছে। এতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে চাষিদের।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময়ে এবার গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। মাঘের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মুকুল ফুটতে দেখা যায়। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গাছে বেশি মুকুল চোখে পড়েছে। তবে কয়েক দফা শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ে কিছুটা ক্ষতি হলেও ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে আমের বাড়-বাড়ন্তও ভালো হয়েছে। তাই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তেমন কোনো সংশয় নেই।

তবে সংশয় কাটেনি আমচাষিদের মনে। তারা বলছেন, গাছে ভালো আম আছে, পরিপক্বও হয়েছে। দুই দিন আগের ঝড়ে কিছু আম পড়ে গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি শঙ্কা বাজারে ভালো দাম পাওয়া নিয়ে। সময় বেঁধে দেওয়ায় একসঙ্গে সব বাগান মালিক আম পাড়ায় বাজারে হঠাৎ সরবরাহ বেড়ে যায়। এতে আমের বাজারদর নিম্নমুখী হয়।

বাঘা উপজেলার মণিগ্রামের আমচাষি ও ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান বলেন, জ্যৈষ্ঠ মাস পড়লে রাজশাহীতে ধীরে ধীরে আম পাকতে শুরু করে। কোনো আম আগে পেকে যায়, কোনোটা আবার পরে। তাই বিভিন্ন জাত ও নামের আম পর্যায়ক্রমে নামতে থাকে বাজারে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা মেনে নামানোয় গতবছর বাজারে প্রায় এক সঙ্গেই হাজির হয়েছিল সব জাতের আম। তবে এবার তেমনটি হবে না বলে আশা করি।

পুঠিয়া এলাকার আমচাষি জসিম উদ্দিন বলেন, গাছে পরিপক্ব করে আম নামালে আর কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকাতে হয় না। প্রশাসনের নজরদারি থাকায় সবাই (আমচাষি) এখন গাছ থেকে পুষ্ট আম পাড়েন। তবে ঈদের আগে খুব বেশি আম পাড়বেন না চাষিরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর