‘সিএসকে তড়িঘড়ি জেলে পাঠানো ঠিক হয়নি’

, জাতীয়

সেন্ট্রাল ডেস্ক ২ | 2023-08-27 01:35:24

লক্ষ্মীপুরের সাবেক সিভিল সার্জন (সিএস) ডা. সালাহউদ্দিন শরিফকে তড়িঘড়ি করে জেলে পাঠানো ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি এটাকে দুঃখজনক ঘটনা বলেও উল্লেখ করেছেন। মন্ত্রী মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। গাজীপুরের তেঁতুইবাড়ি এলাকায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে ফ্রি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ক্যাম্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ১৪ দলের সমন্বয়ক। অনুষ্ঠান শেষে ডা. সালাহউদ্দিন শরিফকে জেলে পাঠানো ও জামিনে মুক্তি দেওয়া বিষয়ে মন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চান সাংবাদিকরা। উত্তরে তিনি বলেন, দু’জন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার মধ্যে ঘটে যাওয়া একটি অপ্রীতিকর ঘটনায় তড়িঘড়ি করে একজন সাবেক সিএসকে জেলে দেওয়া সমীচীন হয়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি আজ আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি।’ সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটা ভালো নয় মন্তব্য করে ১৪ দলের সমন্বয়ক বলেন, ‘তারা জনগণের সেবক, সামান্য একটি ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে একজনকে যদি জেল দেওয়া হয় তাহলে এটার রিঅ্যাকশন হতে পারে। তবে ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে জন্য আমরা সজাগ।’ প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে লক্ষ¥ীপুর শহরের জেলা প্রশাসকের বাসভবন এলাকার কাকলি শিশু অঙ্গন নামে একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রবেশমুখে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম ও জেলার সাবেক সিভিল সার্জন ড. সালাহ উদ্দিন শরিফের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও  হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সালাহ উদ্দিনকে আটক করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়। পরে পুলিশ তাকে কারাগারে পাঠায়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। এ ঘটনায় সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লক্ষক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আলোচনা সভায় বসেন জেলা বিএমএ ও স্বাচিপ নেতারা। তারা ডা. সালাহ উদ্দিন শরিফের মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে মুক্তি না দিলে কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন চিকিৎসক নেতারা। গতকাল সকাল থেকেই সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা জেলা আদালতপাড়ায় অবস্থান করায় চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন রোগীরা। এরপর ডা. সালাহ উদ্দিন শরিফের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে জামিন দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মীর শওকত হোসেন। পরে বেলা সোয়া ১১টার দিকে তিনি জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান। এদিকে, নয় দিনব্যাপী বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ক্যাম্পে ১০৫ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। চিকিৎসাসেবা দেন জার্মানি, হাঙ্গেরি, নেদারল্যান্ড ও বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পেয়ে রোগীরাও সন্তোষ প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মালয়েশিয়া হাইকমিশনের পরামর্শদাতা ইধাম জুহুরি মোঃ ইউনুস, গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ মঞ্জুরুল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজের সিইও জায়তুন বিনতি সুলাইমান, মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডা. রাজীব হাসান প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর