বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাই চেষ্টার মামলায় পলাশের সাবেক স্ত্রী চিত্রনায়িকা সিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য চট্টগ্রামের আসতে হবে। সিমলার একাধিক মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেও তার সঙ্গে কথা বলতে পারেন নি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। সিমলা কোথায় আছে সেটিও জানেন না ওই কর্মকর্তা। তিনি (সিমলা) নিজের থেকেও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নি।
ফলে পুলিশ বাধ্য হয়ে স্থায়ী ঠিকানা ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সিমলার বাবার বাড়িতে পুলিশ নোটিশ দিচ্ছে। এতে তিনি হাজির না হলে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করে মামলা চার্জশিট দিবেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
সিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, মামলায় ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ জন বিমানের ক্রু, এছাড়া উক্ত বিমানের ইঞ্ছিনিয়ার, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরের ম্যানেজার, স্টেশন কর্মকর্তা, বিমান বন্দরের কন্ট্রোল রুমের ৪ কর্মকর্তা, প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়েছেন।
শহীদুল্লাহ বলেন, ‘ঘটনার পর যেসব আলামত উদ্ধার হয়েছিল, সেগুলো আমরা পেয়েছি। এছাড়াও র্যাব, সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে একটি খেলনা পিস্তল ও কিছু বিস্ফোরক সদৃশ্য বস্তু আলামত হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এসব আলামত প্লেন ছিনতাই চেষ্টাকারী নিহত যুবক মো. পলাশ আহমেদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩ মার্চ সিমলার সঙ্গে পলাশের বিয়ে হয়। ওই বছরের ৬ নভেম্বর তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। চিত্র নায়িকা সিমলার সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদের পর বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছিলেন পলাশ। ঘটনার দিন উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খী’ চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণের পর পলাশ সিমলার সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরই পরিপ্রক্ষিতে চিত্রনায়িকা সিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া বার্তা২৪কে বলেন, এ মামলা নিয়ে সিমলাকে চট্টগ্রামে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। আর আগে ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি। তাই তার স্থায়ী ঠিকানায় নোটিশ পাঠানোরে উদ্যেগ নিয়েছি। আগামী কয়েকদিনের চট্টগ্রাম থেকে এ নোটিশ প্রেরণ করা হবে। তাতেও যদি সে হাজির না হয় তাকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেওয়া হবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৫ টা ১৩ মিনিটে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ বিমান এয়ার লাইন্সের বিমান বিজি-১৪৭ উড্ডয়নের ১৫ মিনিট পর পলাশ আহমেদ নামে এক দুস্কৃতকারি বোমা সদৃশ বস্তু ও অস্ত্র দেখিয়ে বিমানটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। ৫টা ৪১ মিনিটে বিমানটি শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করে।
প্লেনের ইমারজেন্সি ডোর দিয়ে যাত্রী ও কেবিন ক্রুদের দ্রুত বের করে আনা হয়। পরে যৌথবাহিনীর প্যারা কমান্ডো টিমের অভিযানে মারা যায় পলাশ আহমেদ।