দর্জির অর্ডার বন্ধে কমেছে পাঞ্জাবির কাপড় বিক্রি

ঢাকা, জাতীয়

ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪ | 2023-10-06 12:13:18

টানা এক মাসের সিয়াম সাধনার পর আসে মুসলিম জাতির অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই দিনে নতুন পোশাকে মুসলামনরা নিজেদের ঈদ উৎসবকে করে তোলেন আরেও রঙিন। আর ঈদে মুসলিম পুরুষদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকে পাঞ্জাবি। কেউ কেউ সরাসরি বানানো পঞ্জাবি কিনলেও, কারও চাই নিজের মতো করে তৈরি পঞ্জাবি।

ঈদের বিভিন্ন শপিংমলের পাঞ্জাবির দোকানগুলোর পাশাপাশি গজ কাপড়ের দোকানের প্রতিও থাকে ক্রেতাদের বাড়তি আগ্রহ। তবে দর্জির অর্ডার বন্ধ করে দেওয়ায় কমেছে পাঞ্জাবির কাপড় বিক্রি।

দেশে অন্যতম কাপড়ের পাইকারি কেনাকাটার বৃহৎ বাজার পুরান ঢাকার ইসলামপুর। থান কাপড়, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজের কাপড়, শার্ট-প্যান্ট, পাজামা-পাঞ্জাবি ও বোরকার কাপড় এবং বিছানার চাদর, পর্দাসহ সব ধরনের পোশাক পণ্যের বিপুল সমারোহ থাকে এ বাজারে। পবিত্র শবে বরাতের দিন থেকেই ছেলেদের পাঞ্জাবির গজ কাপড়ের দোকানে থাকে উপচে পড়া ভিড়। তবে দর্জিগুলোতে অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় ১৫ রমজানের পর থেকে পাঞ্জাবির গজ কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় কিছুটা কম থাকে।

রোববার (২৬ মে) সরেজমিনে ইসলামপুর ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে ক্রেতাদের নিয়মিত সমাগম রয়েছে। অধিকাংশ দোকানেই বেচাকেনায় ব্যস্ত বিক্রেতারা। তবে কিছু দোকানে ভিন্ন চিত্রও দেখা গেছে।

দোকানিরা বলছেন, এ সময় সাধারণত বিক্রি কিছুটা কমই হয়। দর্জিগুলো অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দেয়। কাপড়ের বিক্রি খুবই কম।

পাঞ্জাবির কাপড় বিক্রির দোকানি মো. আলামীন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঈদের বেচাকেনা ভালোই হয়েছে, তবে এখন বিক্রি কম। শবে বরাতের একমাস আগে থেকেই পাঞ্জাবির কাপড় বিক্রি শুরু হয়। তাই এখন বিক্রি কম। টেইলারসগুলোর অর্ডার নেওয়া বন্ধ থাকায় এখন ক্রেতাদের চাপ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ঈদের আগে আমাদের আর কাপড়ের দাম বাড়ার সম্ভবনা নেই। রমজানের আগেই মোটামুটি ভালো বিক্রি করেছি। সে সময় গড়ে প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রি হয়েছে। কারণ, অনেকে ঈদের পাশাপাশি রমজানের জন্যও পাঞ্জাবি বানান।’

দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার জাপানি অদ্দি পাঞ্জাবির কাপড় বেশ ভালো চলেছে। এই কাপড়ের দাম গজ প্রতি ৭০০ টাকা। আর জাপানি টরে কাপড়রের দাম সাড়ে ৫০০ টাকা। ইন্ডিয়ান ভ্যারাইটিস লাকনু পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ৬০০ টাকায়। এ ছাড়া আলিশান, নর্দানা, হাজিবা কাপড়, আল কালাম, আল মুরাদ, সানা, সাফিনা, র‌্যাপলিকার ও লিলেন ক্লাব প্রিন্ট পাওয়া যাচ্ছে ইসলামপুরে।

হাজী ক্লোথ স্টোরের বিক্রেতা জিএস জয় বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এখন বেচাকেনা কম। শবে বরাতের পর ভালো বেচাকেনা হয়েছে। এখন ২০ রমজান শেষ, রেডিমেট কাপড় অনেক কমে গেছে। এখন রয়েছে থান কাপড়। তাই বিক্রি কিছুটা কম। আশা করি আরো কিছু বেচাকেনা হবে। তবে আগের মতো হবে না।’

খিলগাঁও থেকে পাঞ্জাবির কাপড় কিনতে আসা কাওসার আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘দাম অন্যান্য সময়ের মতোই। এখানে দাম একটু কমই থাকে। সাধারণত এই সময় টেইলারসগুলোতে অর্ডার নেয় না। তবে কিছু পরিচিত টেইলারসকে আগে থেকেই বলা আছে, তাই সমস্যা হবে না। নিজের জন্য পাঞ্জাবির কাপড় আগেই নিয়েছি, এখন বাবা-চাচাদের জন্য নিচ্ছি।’

গেন্ডারিয়া থেকে আসা মাদরাসা ছাত্র সজীব মিয়া বাতা২৪.কমকে বলেন, ‘পাঞ্জাবির কাপড় আগেও নিয়েছি। এখন আবার বন্ধুদেরকে নিয়েই নিতে এসেছি। এখন বানাতে না পারলে ঈদের পর বানাব। তবে চেষ্টা থাকবে ঈদেই বানানোর।’

পুরান ঢাকার দর্জি দোকানি শামীম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘শবে বরাতের আগে থেকেই পাঞ্জাবির অর্ডার নিয়েছি। তবে এখন আর নিচ্ছি না। অনেক অর্ডারের কাজ বাকি আছে। পরিচিত অনেকে জোর করে দিয়ে যাচ্ছে, তবে আজকে থেকে আর কারও কাপড় রাখাই সম্ভব না।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর