চলছে জ্যৈষ্ঠ মাস, এই মাসকে মধুমাসও বলা চলে। এই মাসেই বাজারে নামে রসালো সব মিষ্টি ফল। আর এই মধুমাসের সব থেকে জনপ্রিয় ফল হচ্ছে আম। চলতি মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন প্রকার পাকা আম পাওয়া যায়। যা নির্দিষ্ট সময় অনুসারে বাজারে আসার কথা।
রাজধানীর কয়েকটি বাজার ও আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, রোজা মাসের কারণে বাজারে অন্যান্য ফলের তুলনায় আমের চাহিদা সব থেকে বেশি। আর এই চাহিদার বিষয়টি বুঝতে পেরে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে অপরিপক্ব আম নিয়ে বসেছেন।
র্যাব সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, তবে র্যাবের পক্ষ থেকে এসব অপরিপক্ব আমের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। গত কয়েকদিনে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মণ অপরিপক্ব আম নষ্ট করেছে র্যাব। যার মধ্যে অধিকাংশ হচ্ছে ল্যাংড়া আম। কিন্তু সরকারি হিসেব অনুযায়ী ৬ জুনের আগে বাগানে এ আম পাকার কথা নয়।
অন্যদিকে র্যাবের অভিযানে একটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে, ক্রেতারা আম পাকার সময়ের বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন না। তাই আম ব্যবসায়ীরা নানা মিথ্যা তথ্য দিয়ে কেমিকেলে পাকানো অপরিপক্ব আম ক্রেতাদের হাতে তুলা দিচ্ছেন। যদিও র্যাবের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আম পাকার সময় নিয়ে আলোচনা করা হলেও ক্রেতাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে তেমন কোনো কার্যক্রম নেওয়া হয়নি।
তাই বার্তা২৪.কম-এর পাঠকদের জন্য প্রকারভেদে বিভিন্ন আম পাকার ও বাজারে আসার সময় তুলে ধরা হল। র্যাব ও কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
এখন বাজারে সেসব ভেজালমুক্ত আম পাওয়া যাবে: র্যাব ও কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বাজারে এখন ৪ প্রকারের ভেজালমুক্ত পাকা আম পাওয়া যাবে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী এসব আম ১৫ মে থেকে ২৫ মের মধ্যে বাজরে চলে আসার কথা। কেননা আম দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন বাগানে ১২ থেকে ২২ মের মধ্যে সরকারি হিসেব অনুযায়ী আম পাকার কথা।
আমগুলো হল-সাতক্ষীরার গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ ,হিমসাগর ও রাজশাহীর গুটি আম। এসব আম ক্রেতারা বাজার থেকে কিনতে পারবেন তবে কেনার আগে আমের মান অবশ্যই দেখে নিতে হবে।
যেসব প্রজাতির আম এখন বাজার থেকে কেনা যাবে না: সরকারি তালিকা অনুযায়ী রাজশাহীর হিমসাগর,সাতক্ষীরার ল্যাংড়া আম, রাজশাহীর ল্যাংড়া আম, লক্ষ্মন ভোগ, আম্রপালি, রানিপাসান্দ, ফজলি, সুরমা ফজলি ও আশ্বিনা আম এখনই বাজার থেকে কেনা যাবে না। কেননা, হিসেব অনুযায়ী এসব আম এখনো গাছে পাকেনি। আর যদি তার পরেও এসব আম বাজারে পাওয়া তাহলে তা কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো অপরিপক্ব আম।
কবে কেনা যাবে এসব আম: র্যাব ও কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীর হিমসাগর আম এবং রানিপাসান্দ ও লক্ষণভোগ আম পাকার কথা ২৮ মে, যা বাজার থেকে ক্রেতারা কিনতে পারবেন ৩০ মের দিকে। রাজশাহীর ল্যাংড়া পাকার কথা ৫ জুন, যা বাজারের আসবে ৭-৯ জুনের মধ্যে ও আম্রপালি ৮ জুন থেকে ১৬ জুনের মধ্যে পাকার কথা, যা ক্রেতারা ১০-১২ জুনের দিকে প্রথম পর্যায়ের আম্রপালি আম কিনতে পারবেন। অন্যদিকে ফজলি ও সুরমা ফজলি ১৬ জুন বাজারে ও আশ্বিনা আম ১ জুলাই থেকে বাজারজাত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাজারে এখন শুধুমাত্র সাতক্ষীরার গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, হিমসাগর ও রাজশাহীর গুটি আম বাজারজাত করার কথা। কিন্তু বাজারে এখন ল্যাংড়া আমের ছড়াছড়ি, যা বাজারের আসার কথা ৮ জুন।
এ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট একটা আদেশও দিয়েছেন। তাই বাজার মনিটরিংয়ের অংশ হিসেবে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। অপরিপক্ব ও ভেজাল আম বাজারে দেখা মাত্রই আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।