কয়েকদিন বাদেই মুসলিম উম্মাহর অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল ফিতর। এ উপলক্ষ্যে পরিবার আর আত্মীয় স্বজনকে খুশি করতে কেনাকাটায় ব্যস্ত নগরবাসী। বসে নেই অল্প আয়ের কেটে খাওয়া মানুষজনও। সামর্থ্য ও ইচ্ছের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে তারা ছুটছেন ফুটপাতের দোকানে।
নগরীর নিউমার্কেট, রিয়াউদ্দিন বাজার ও আন্দরিকল্লা এলাকার হকার্স মার্কেটগুলো এখন ক্রেতা আর বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম। ফুটপাত হয়ে রাস্তায় এসে ঠেকেছে এসব ভ্রাম্যমাণ দোকান। মূলত নিম্নবিত্তদের মার্কেট হিসেবে পরিচিত এ মার্কেটগুলো। যেখানে ভিড় করছেন সমাজের নিম্ন আয়ের থেকে উচ্চ আয়ের মানুষরাও।
বিক্রেতারা বলছেন, দিনে বিক্রি কিছুটা কম থাকলেও সন্ধ্যা থেকে সেহরি পর্যন্ত জমজমাট বিক্রি চলে।
বুধবার (২৯ মে) দুপুরে মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, রিয়াজউদ্দিন বাজারের প্রবেশমুখ ঘিরে ফুটপাতের দোকানে ভিড় বেশি। চলছে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার নানান কৌশল। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী নারী ও পুরুষ রয়েছেন।
ফুটপাতের দোকানগুলোতে থান কাপড় থেকে শুরু করে লুঙ্গি, শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, জুতা, পাঞ্জাবি, টুপি, বেল্ট ও নারীদের সালোয়ার কামিজসহ সব ধরনের কসমেটিকসও পাওয়া যাচ্ছে। দামও তুলনামূলক কম। রয়েছে ঘর সাজানোর গৃহস্থালি জিনিসপত্রও।
পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হকার্স মার্কেটে এসেছেন গৃহবধূ নাসরিন পারভীন। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘শহরের অন্যান্য বড় বিপণি বিতানে জামা কাপড়ের দামবেশি। আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এমন মার্কেট আশা আর স্বস্তির। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এখান থেকে শপিং করব।’
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাড়তি আয়ের আশায় কিছু বিক্রেতা মার্কেটগুলো ঘিরে ঈদের পোশাক, জুতা, পাঞ্জাবি, টুপি ও প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রি করছেন। এসব মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কারণে মূল ব্যবসায়ীদের কপাল পুড়ছে বলেও অভিযোগ করছেন।
বিক্রি কেমন হচ্ছে এমন জানতে চাইলে সৃজিত ফ্যাশন হাউসের এক বিক্রেতা বলেন, ‘দিনে কিছুটা কম। তবে সন্ধ্যা পরে জমজমাট বেচা বিক্রি হয়। এখানে মূলত সরকারি চাকরিজীবীরা আসেন। সেই হিসেবে শেষ তিন-চার দিন ব্যাপক বিক্রি হবে।’
নিউ মার্কেটের ডান পাশে তাকাকমুণ্ডি লেইনে জুতার দোকান সাজিয়ে বিক্রি করছেন সিরাজ উদ্দিন নামে এক বিক্রেতা। তিনি বার্তা২৪.কম-কে জানান, বিশ রোজার পর থেকে খুব ভালো বিক্রি হচ্ছে। স্যান্ডেল, চামড়া থেকে বিভিন্ন কেডসের জুতোও রয়েছে। রকম ফের অনুযায়ী ২৫০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাঞ্জাবি আর শার্টের দোকানের বিক্রেতা নুরল হকও জানান, ইফতারের পরে তার দোকানে বেচা বিক্রি দিনের অন্য সময়ের তুলনায় বেশি হয়।
রিয়াউদ্দীন বাজারে নিজেদের পছন্দ, সামর্থ্য ও স্বাচ্ছন্দ্য অনুযায়ী ক্রেতারা পরিবারের সবার জন্য শপিং করতে পারেন- এমনটাই জানালেন রিয়াউদ্দিন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মো. নাসিম।
তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘অন্য শপিং মলে কোনো একটি কিংবা একাধিক পণ্য থাকে। কিন্তু এখানে সব বয়সী ক্রেতার পছন্দসই জিনিস পাবেন তুলনামূলক সাশ্রয়ী রেটে। সবাই পরিবার পরিজনকে কেনাকাটা করতে এখানে আসেন। নিম্ন কিংবা উচ্চ বিত্ত সবাই আসেন এখানে চাহিদা মতো।’