শাড়ি কিনে নারীর মন ভরেনি কখনোই। বাহারি ডিজাইন, রঙ, নকশা দেখলেই নারীরা শাড়ি কেনার দিকে ঝুঁকে পড়েন। আর উৎসব আসলে তো কথা নেই; আধুনিক, আকাশ সংস্কৃতির যুগেও নারীদের শাড়ির কেনার আগ্রহ বেড়ে যায় বহুগুণে।
এবারের ঈদ-উল ফিতরেও নারীরা পছন্দের শাড়ি কিনতে ভিড় করছেন চট্টগ্রাম মহানগরীর মার্কেট, শপিংমলগুলোতে। তবে এই ঈদে সবচেয়ে স্বস্তির বিষয়, বিদেশি শাড়ির চেয়ে দেশি শাড়ির প্রতি সবচেয়ে বেশি চাহিদা ক্রেতাদের। ক্রেতারা শপিং ও বিপণিবিতান চষে বেড়াচ্ছেন দেশি শাড়ির খোঁজে। ভারতীয় শাড়ির প্রভাব থাকলেও, দেশি শাড়ি মন জয় করেছে ক্রেতাদের।
মঙ্গলবার (২৮ মে) নগরীর বেশ কয়েকটি বিপণিবিতান ও ফ্যাশন হাউস ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বিপণিবিতানগুলোতে দেখা যায়, এবার ক্রেতাদের নজর কাড়ছে পেটানো কাজের ঐতিহ্যবাহী শাড়ি। নকশায় প্রাধান্য পাচ্ছে ট্র্যাডিশনাল সব মোটিফ। আর রঙের ক্ষেত্রে ডিজাইনরা মৌসুমের সঙ্গে মিল রেখে রঙ ও নকশার বৈচিত্র্যকে অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন। বিশেষ করে সুতি, সিল্ক, আর তাঁতের শাড়ি চাহিদা সর্বাধিক। তাঁত আর সুতি শাড়ির মধ্য ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইলের তাঁত, জুট কটন আর সিল্কের মধ্যে টাঙ্গাইলে সিল্ক, হার্ফ সিল্ক, সিল্ক জামদানি ও রাজশাহীর সিল্ক অন্যতম।
এছাড়া স্বনামধন্য শাড়ির প্রতিষ্ঠানগুলো হালের সঙ্গে মিল রেখে সিল্কের পাশাপাশি মসলিন, অ্যান্ডি, বলাকা, তসর সিল্কে নানান নকশার কাজ নিয়ে এসেছে। দেশি কাপড়ের পাশাপাশি শোভা পাচ্ছে ভারতীয়, পাকিস্তানি ও চায়না কাপড়। মিমি সুপার মার্কেটের সেন্ট্রাল, চন্দুবিন্দু বুটিকস, বধূয়া, আঁচল, শাড়িজ, পিন্ধন, মানসী, কানন, শাওন ভাদো, সুন্দরীসহ বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে দেশি-বিদেশী শাড়ি।
মিমি সুপার মার্কেটের বধূয়া শাড়ির দোকানি আহমেদ শাহরিয়ার বার্তা২৪.কমকে জানান, সকাল সাড়ে ১০ টা থেকেই ক্রেতারা মার্কেটে আসছেন। আমরাও চাহিদার ওপর নির্ভর করে শাড়ি এনেছি। ক্রেতাদের কাছে ভারতীয় পণ্যের চাহিদা বেশি। তাই দেশি পণ্যের চেয়ে ব্যবসায়ীরা বড় বিনিয়োগ করে ভারতীয় পণ্য এনেছে। কিন্তু দেশীয় পণ্যের গুনগত মান ও কাজের কারণে দেশি শাড়ির বিক্রি বেশি। তিন হাজার থেকে ২২ হাজার টাকার শাড়িও এখানে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য বছরগুলোতে বলিউডের নায়িকাদের চরিত্রের সঙ্গে মিল রেখে বাজার ছেয়ে যায় ভারতীয় পণ্যে। এবারও এমন শাড়ি থাকলেও দেশি শাড়ির বৈচিত্র্য আর ডিজাইন ফুটিয় আনতে ক্রেতারা ঝুঁকছেন দেশীয় বিপণিবিতানে।
নিউমার্কেটে শপিং করতে আসা আয়সা আমীন বার্তা২৪.কমকে জানান, স্বাভাবিক অর্থে নিউমার্কেটে দাম একুট বেশি। তবে ভালো কালেকশন এবং পছন্দের শাড়ির জন্য এখানে আসা। সবগুলো মনে হচ্ছে একই রকম। ভারতীয়, দেশি দু‘টোই দেখেছি। এবার আমাদের দেশীয় শাড়ির ফ্যাশন হাউসগুলো ভালো করেছে। আশা করছি দেশীয় শাড়ি নিয়ে নেব।
এদিকে ক্রেতাদের বাড়তি আর্কষণ এনে দিচ্ছে মূল্য হ্রাসসহ বিশেষ ছাড়। আফমি প্লাজা শপিং সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মো. আবদুল্লাহ বার্তা২৪.কমকে জানান, ক্রেতাদের চাহিদার শেষ নেই। সবাই দীর্ঘক্ষণ ধরে যাচাই বাছাই করে পছন্দ ও মানানসই শাড়িটাই কিনছেন। এক্ষেত্রে আমরা অনেক ক্ষেত্রে মূল্য ছাড় এবং প্রণোদনা দিচ্ছি। অনেকে আবার শপিং-এ আসতে চান না। বাসায় বসে অনলাইনে কেনাকাটা করতে চায়। সেখানও বিশেষ ছাড় দেওয়া হচ্ছে।