মোদির জয়ে তিস্তা নিয়ে আশাবাদী উত্তরের মানুষ

রংপুর, জাতীয়

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-08-30 00:10:52

ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা দ্বিতীয়বারের মতো নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসায় আনন্দিত বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তাপাড়ের মানুষ। গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ-ভারত যত দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক হয়েছে, ততই তিস্তার উপর নির্ভরশীল উত্তরের পাঁচ জেলার কোটি মানুষ আশায় বুক বেঁধেছেন।

কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সায় না থাকায় থমকে গেছে বহুল কাঙ্ক্ষিত তিস্তা চুক্তি। বছরের পর বছর ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তির পালে লাগেনি প্রত্যাশা পূরণের হাওয়া।

তবে এবারের নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেসের ভরাডুবি আর নরেন্দ্র মোদির নিরষ্কুশ জয়ে ফের তিস্তার পানি পেতে স্বপ্ন দেখছেন উত্তরের বাসিন্দারা। তারা মনে করছেন, এবার হয়তো মিলবে তিস্তার অমূল্য পানি। যা দিয়ে বাঁচবে উত্তরের জীবন-জীবিকা।

আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, তিস্তা চুক্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তরিকতা থাকলেও তাতে সায় নেই পশ্চিমবঙ্গের মমতা ব্যানার্জির। তাই কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পূর্ব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। মোদি চাইলেই ধু-ধু বালুচরে মরুভূমির আদলে হারিয়ে যাওয়া তিস্তায় ফিরবে পানি, জেগে উঠবে বাংলাদেশের উত্তরের লাখো মানুষের প্রাণ।

এ ব্যাপারে তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক নন্দিনী দাস বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘মোদি সরকার যেহেতু নতুন করে আবারো ক্ষমতায় এসেছে। এখন দুই দেশের সরকার একটা ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে এমন একটা চুক্তি বাস্তবায়ন করবে, যাতে তিস্তার পানিতে দুই দেশেরই স্বার্থ রক্ষিত হয়।’

অন্যদিকে রিভারাইন পিপল-এর পরিচালক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘যদি বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয় এবং উচ্চ পর্যায়ে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটাকে কাজে লাগানো যায়। তাহলে তিস্তার পানি ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে পাওয়া সম্ভব। এজন্য অবশ্যই কেন্দ্রীয় সরকার ও নরেন্দ্র মোদির সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কটাকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে।’

প্রতিশ্রুতির বেড়াজালে আটকে না রেখে দেশের মানুষের বহুল আকাঙ্ক্ষার তিস্তা চুক্তির বাস্তবায়নে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন গবেষক ও লেখক ড. মিজানুর রহমান। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারকে এবার সুনির্দিষ্টভাবে তিস্তা চুক্তির বাস্তবায়নের জন্য অনড় হতে হবে। প্রয়োজনবোধে চুক্তির খসড়ার সংশোধন করে দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক করে কেন্দ্রীয় সরকারকে চাপ দিতে হবে।’

তিস্তা বাঁচাও-নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম হক্কানীর মতে, তিস্তা চুক্তি পশ্চিমবঙ্গের সরকারের সাথে নয়, এ চুক্তি হবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার প্রধান নরেন্দ্র মোদির ভূমিকাই এখানে মুখ্য। তার নতুন বিজয়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ ভীষণ আশাবাদী।’

উল্লেখ্য, এবারের ভারতের লোকসভা নির্বাচন সাত ধাপে সম্পন্ন হয়েছে। গত ১৯ মে সর্বশেষ ধাপ অনুষ্ঠিত হবার পর ২৩ মে ভোট গণনা শেষে বিজেপি নেতৃত্বাধীন নরেন্দ্র মোদির জোট এনডিএ নিরষ্কুশ জয় লাভ করে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মে) টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন জোটের প্রধান দল বিজেপি’র নরেন্দ্র মোদি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর