ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ছে সদরঘাটে

ঢাকা, জাতীয়

রেজা-উদ-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 13:51:09

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার। আগামী সপ্তাহে পবিত্র ঈদুল ফিতর। নগরের এক দিকে যেমন কেনা-কাটা, ঈদ সালামির তোড়জোড়, অন্যদিকে শুরু হয়েছে শিকড়ের টানে ঘরে ফেরার ব্যস্ততা। বাস, ট্রেন, নৌ বা আকাশ পথ, যে যেভাবে পারছেন রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঘরে ফেরার অন্যতম বাহন নৌযান। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) তাই বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় বেড়েছে রাজধানীর সদরঘাটে। লঞ্চ, স্টিমারগুলো ঘাটে যাত্রীদের অপেক্ষা করছে।

লঞ্চের ডেকে আসন পেতেছেন অসংখ্য যাত্রী, ছবি: সৈয়দ মেহেদী

 

বিকেল ৩টার দিকে সদরঘাট ঘুরে দেখা যায়, অন্য দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার ঘাটে যাত্রীর সংখ্যা বেশি। বিভিন্ন রুটের লঞ্চ ভেড়ানো রয়েছে ঘাটে। যাত্রীরা নিজেদের রুটের লঞ্চে উঠছেন। চারদিকে যাত্রী, কুলি, শ্রমিক, টিকিট বিক্রেতাদের ব্যস্ততা। সকাল থেকেই লঞ্চগুলো অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে চলাচল শুরু করেছে।

এমভি মানিক-১ লঞ্চের ডেকে উঠে দেখা যায়, হাঁটার জায়গা নেই। যাত্রীরা গোটা ডেস্কে চাদর, পাটি বা গামছা বিছিয়ে আসন পেতেছেন। অনেকে ছাদেও আসন পেতেছেন। মাথার ওপরে রোদ। কিন্তু তাতে কী! বাড়ি তো যেতে হবে।



এমভি মানিক-১ লঞ্চের কর্মকর্তা আশিক বার্তা২৪.কমকে জানান, তাদের লঞ্চের কেবিন ও সিট অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। তবে ডেকের যাত্রীদের নগদে টিকিট দেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার। কিন্তু তারপরও লঞ্চে যাত্রীদের জায়গা হচ্ছে না। প্রচুর মানুষ লঞ্চে উঠে পড়েছেন। কারো কাছ থেকেই অতিরিক্ত কোনো ভাড়া নেওয়া হয়নি।

সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত যে কয়েকটি লঞ্চ সদরঘাট থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে, সেসব লঞ্চে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। কষ্ট হলেও এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে কোনো অভিযোগ নেই।

চাঁদপুরগামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহির আহমেদ চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি হলেও পরীক্ষা থাকায় এতোদিন বাড়িতে যেতে পারিনি। আজ পরীক্ষা শেষ। তাই পরীক্ষা দিয়েই চলে এসেছি সদরঘাটে লঞ্চ ধরতে। টিকিট পেতে কষ্ট হয়েছে। কিছুটা বেশি দাম দিয়েই টিকিট কেটেছি। তবে ঈদে বাড়িতে যাচ্ছি এটাই স্বস্তির।

একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন রহমতউল্লাহ। পটুয়াখালী বাড়ি তার। তিনি জানান, আগামী সপ্তাহে ঈদের ছুটি শুরু। শুধু সোমবার অফিস আছে। ওই দিনটাও ছুটি নিয়েছেন তিনি। যাতে নয়দিনের দীর্ঘ ছুটি কাটাতে পারেন। তাই পরিকল্পনা করেই অগ্রীম টিকিট কেটেছেন লঞ্চের। কিন্তু লঞ্চে উঠে দেখেন, ভিড়ের জন্য লঞ্চে ওঠাই দায়। এখন ভালোয় ভালোয় বাড়ি পৌঁছাতে পারলেই খুশি তিনি।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, ঢাকা নৌবন্দরের হিসেবে এ বছর ঈদ করতে সদরঘাট হয়ে ঘরে ফিরবেন প্রায় অর্ধকোটি মানুষ। ৪৩টি রুটে প্রতিদিন লঞ্চ চলবে ২১৫টি।

ঢাকা নৌবন্দরের তথ্য অনুযায়ী, এ ঈদে ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলবে ২৩টি, ঢাকা-চাঁদপুর রুটে ২৫টি, ঢাকা-পটুয়াখালী রুটে ১৩টি, ঢাকা-হুলারহাট-ভান্ডারিয়া রুটে চলবে ১০টি এবং ঢাকা-ভোলা রুটে চলবে আটটি।

শুধু তাই নয়, এবার ঈদের সময় ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। তাই নৌপথে চলাচলে কিছু সতকর্তার কথা বলা হয়েছে। তিন নম্বর বিপদ সংকেত দিলেই নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর