শাড়ি ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 15:16:45

যত কেনাকাটাই হোক না কেন, বাঙালি নারীদের শাড়ি ছাড়া যেন ঈদের কেনাকাটা অপূর্ণই থেকে যায়। সব কেনাকাটার মধ্যে শাড়ির গুরুত্বটা সবচেয়ে বেশি নারীদের কাছে। তাই তো ঈদ এলেই সকল শাড়ির দোকানে থাকে নারীদের ভিড়।

তবে এ বছর খানিকটা ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঈদের বাকি আর মাত্র ছয় দিন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত শাড়ি বিক্রি হচ্ছে না চাহিদা মতো। বিগত বছরগুলোতে যেমন শাড়ির চাহিদা ছিল, এ বছর তেমনটা হচ্ছে না জানান শাড়ি ব্যবসায়ীরা।

যে সময়টা তরুণী থেকে শুরু করে মধ্যবয়সীদের আনাগোনায় জমজমাট থাকতো ঢাকা শহরের মার্কেটগুলো, এ বছর সেটি অনেকাংশেই কমে গেছে। শাড়ি বিক্রি কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলে ক্ষতির মুখে পরতে পারেন তারা।

শাড়ি বিক্রি কম হওয়ার পিছনে কারণ হিসেবে তীব্র রোদ সাথে দিনের বেলা গরম ও অধিকাংশ ক্রেতাই ভারতমুখী হওয়াকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগের অভিযোগ, তাদের কাস্টমারেরা ভারতে গিয়ে শপিং করেন। ভারতের ভিসা প্রসেসিং এখন খুব সহজ ও ফ্রি হওয়ায় ঐদিকেই ঝুঁকছে অধিকাংশ ক্রেতা।

ঈদের বিকাল বা সন্ধ্যায় নতুন শাড়ি পরে ঘুরতে না বেরুলে নগর-শহরের অনেকের ঈদের আনন্দ মাটি হয়ে যায়। ঈদের দিনে শাড়ি পরে বের হওয়ার জন্য তাই সকলেই নতুন শাড়ি কিনেন। এজন্যই ঈদ এলেই শাড়ির চাহিদা বেড়ে যায়। বিগত বছরগুলোর মতো এবারো বিপুল পরিমাণ শাড়ি মজুদ করে ব্যবসায়ীরা কিন্তু ক্রেতার পরিমাণ কম থাকায় মাথায় হাত দিয়ে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ক্রেতার জন্য।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতার সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে। শাড়ির বাজার খারাপ হওয়ার পেছনের কারণ হিসেবে এক ব্যবসায়ী বলেন, এবার প্রায় ৭০ হাজার মানুষ ভারতে গেছে কেনাকাটা করতে। ভারত ভিসা ফ্রি করে দেওয়ায় দেশের বাজার ছেরে অনেকেই দেশের বাইরে পাড়ি জমাচ্ছে কেনাকাটার জন্য। এজন্য দেশে পর্যাপ্ত শাড়ি থাকলেও বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে।

ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘এ বছর বিক্রি ভালো না। সারাদিন তেমন কোন ক্রেতা নাই। সন্ধ্যার পরে কিছু ক্রেতা আসলেও দিনের বেলা ফাঁকাই থাকে মার্কেট। অন্যান্য বছরে ঈদের বাজারে যা বিক্রি করতাম এ বছর সেই তুলনায় বিক্রি অনেক কম।’

এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ইয়াং জেনারেশনের দেশের শাড়ির প্রতি আগ্রহ কিছুটা কম। যাদের বয়স একটু বেশি তারাই মূলত দেশীয় শাড়ির মূল ক্রেতা। শাড়ির মধ্যে সুতি শাড়িটাই বেশি চলে।’

এদিকে এক ক্রেতার বলেন, ‘শাড়ির দামটা এবার একটু বেশি। যেহেতু ঈদ এলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায় তাই শাড়ির দামটাও একটু বেশি।’ গরমের মধ্যে সুতি শাড়িটাই পছন্দ এই ক্রেতার। কাউকে গিফট দেওয়ার ক্ষেত্রেও দেশে নির্মিত সুতির উপর আস্থা তার। বাইরের শাড়ির থেকে দেশিই ভালো বলে মনে করেন এই ক্রেতা।

টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির চাহিদা বেশি মার্কেটে। ঈদ উপলক্ষে বেশি একটা দাম বাড়েনি শাড়ির। অনেকেই গিফটের জন্য দেশি সুতি শাড়ি নেন এবং নিজের জন্য ভারতের শাড়িই বেশি পছন্দ অধিকাংশের। যাদের বাজেট বেশি তারা বিদেশি শাড়ি বেশি পছন্দ করেন। ৫০০ থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিভিন্ন শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে।

ভারতের সাথে পাকিস্তানের শাড়ির চাহিদাও আছে বাজারে। পাকিস্তানের বারিস, লোন, আর ভারতের কাতান, ল্যাহেঙ্গা, জর্জেট, ওরগানজা সিল্ক ও সেই সাথে দেশি শাড়ি যেমন প্রিন্ট, কাতান, টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি, ঢাকাই জামদানি ইত্যাদি শাড়ির চাহিদা আছে বাংলাদশে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর