উৎসব সন্নিকটে। দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদের বার্তা। নগরীসহ পাড়ার অলি-গলিতে ঈদের আমেজ। পরিবার আর আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে ঈদ করতে অনেকেই পৌঁছে গেছেন বাড়িতে। কেউবা দু-একদিনের মধ্যে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নাগরিক ব্যস্ততা আর চাকরির ফাঁকে ইতোমধ্যে কেনাকাটা সেরে ফেলেছেন ক্রেতারা। ঈদ প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে শহরের দোকানগুলোতে এখন জমে উঠেছে আতর, সুরমা, টুপি, জায়নামাজ আর তসবির।
শনিবার (১লা জুন) নগরীর রিয়াউদ্দিন, জেল রোড আমানত শাহ মাজার ,নিউ মার্কেট ও কাজীর দেউড়ি ঘুরে দেখা যায়, মূলত ঈদ উপলক্ষে এসব পণ্যের বিকিকিনি জমজমাট হয়ে উঠেছে।
বিক্রেতারা জানান, ঈদের নামাজের প্রস্তুতির রেওয়াজ হিসেবে ক্রেতারা এসব পণ্য ক্রয় করছেন। চলবে চাঁদ রাত পর্যন্ত।
রিয়াউদ্দিন তামাকুণ্ড লাইনের মিসকাত ট্রেডিং লিমিটেডের ম্যানেজার ইসকান্দর চৌধুরী আতরের পসরা সাজিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছিলেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, দুবাইয়ের মাউয়াজ ট্রেডিং এল এল সি হলো তাদের মূল ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান। সেখান থেকেই আনা হয়েছে আতর। এর পাশাপাশি আরও কয়েক দেশের আতর রয়েছে। এর মধ্যে বস, স্যানেল, খ্রিস্টান ডিউর, গুছি, টমি, পোলো ও এরাবিয়ান উদ অন্যতম। এছাড়া জান্নাতুল ফেরদৌসসহ আছে বেলি, রজনীগন্ধ্যা, হাসনাহেনা, জুঁইসহ নানান ফুলের সুগন্ধি আতর।
তিনি আরও জানান, বিশেষ করে দুবাই, ভারত,সৌদি আরব ও ফ্রান্সের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আতরের কদর বেশি। এমন হরেক পদের শিশির দাম পড়বে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯ হাজার টাকায়।
দোকানে আতর কিনতে আসা ক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রতি ঈদে এখানে আব্বুর সঙ্গে আতর কিনতে আসি। এবার একাই এসেছি। এখানে ভালো মানের আতর আর দামও হাতের নাগালে পাওয়া যায়।’
জেলরোড আমানত শাহ মাজারের দোকানগুলোতে পাকিস্তানি ও ভারতীয় সুরমার পাশাপাশি মিলবে দেশি সুরমা। রয়েছে অ্যালকোহলমুক্ত দেশি ও বিদেশি সুরমাও। পাকিস্তানি হাশেমি সুরমা ১০০ থেকে ১২০, রতিফ সুরমা ৫০ থেকে ৭০, ভারতীয় খোজতি সুরমা ৬০, মোমিরা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি সুরমা দানিসহ ৬০ থেকে ১৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
সেখানকার দোকানে দুবাই, তুরস্ক,পাকিস্তান ও সৌদি আরবের জায়নামাজ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। দেশি জায়নামাজ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৩০ টাকায়। আর বিভিন্ন তসবি ৩০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলরোড আমানত শাহ মাজারের দোকানে জায়নামাজ আর সুরমা পছন্দ করছিলেন নগরীর দুই নম্বর গেইট এলাকার বাসিন্দা ওমর ফারুক। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বাসার সবার জন্য কেনাকাটা শেষ। কেবল নিজের জন্য সুরমা, জায়নামাজ কিনতে এসেছি।’
ঈদের নামাজে পাঞ্জাবির সঙ্গে রং বেরঙের টুপি পরতে পছন্দ করেন শিশু কিশোর থেকে তরুণরা। এর কারণে টুপির কদর বেড়ে যায় দ্বিগুণ। নগরীর কাজীর দেউড়ি সুইচ এরাবিয়ানেও থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বাহারি সব টুপি।
কাশ্মীরি, জর্দানি ও জিন্নাহ টুপিসহ সাদা কাপড়ের সুতির টুপি ৫০ থেকে ২৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এর পাশাপাশি নিউ মার্কেটের পাশে ফুটপাত ও ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতেও বিভিন্ন রঙের টুপি একই দাম রাখছেন বিক্রেতারা।