তীব্র গরমে আনন্দ নেই ‘আনন্দ নগরে’

রংপুর, জাতীয়

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-09-01 13:25:41

টানা তিন দিন ধরে প্রখর রোদে হাঁপিয়ে উঠেছে রংপুরের জনজীবন। সূর্যের আলো এতোই প্রখর যে উপর দিকে তাকানো যায় না। ফলে চুপসে গেছে মানুষের ঈদ আনন্দ। তীব্র দাবদাহে প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে আসছে না। এ অবস্থায় বিনোদন পিপাসু মানুষের আনাগোনা কমে গেছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার আনন্দ নগরে।

পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে আট কিলোমিটার দূরে মদনখালি ইউনিয়নের খালাশপীর হাঁসপাড়া গ্রামে অবস্থিত এই বিনোদন কেন্দ্রটি। লোকজ সংস্কৃতির ঐতিহ্যময় ভাস্কর্য আর শিশু-কিশোরদের আকৃষ্ট করতে রয়েছে অসংখ্য রাইড।

এক যুগ আগে প্রায় ৯০ একর জমির উপর গড়ে তোলা হয় এ বিনোদন কেন্দ্রটি। চারপাশ জুড়ে বৃক্ষের সমাহার। মনোমুগ্ধকর ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, রয়েছে সুবিশাল জলরাজ্য। পুকুর ও মৎস্য হ্যাচারিগুলো যেন জীবন্ত অ্যাকুরিয়াম।

বিনোদন কেন্দ্রটিতে রয়েছে শিশুপার্ক ও কৃত্রিম চিড়িয়াখানা। যেখানে রয়েছে বাঘ, ভাল্লুক, অজগর সাপ, মদন, শকুন, বানর, হরিণসহ নানান প্রাণী। রয়েছে ঝর্ণাধারা, মিউজিয়াম, নৌবিহার, নাগরদোলা, মিনি ট্রেন, আইস ল্যান্ড, ওয়াটার হুইল, রোপ ওয়েল, টাইটানিক জাহাজ, প্যাডেল বোড, ভ্রমণ চা চক্র, প্ল্যানেটরিয়ামসহ নানা আকর্ষণীয় শিশু রাইড।

আদিম যুগের মানুষের আজব গুহায় রয়েছে রাজা-রানীর সেই হারানো রাজ্যের সুর। প্রবেশ করলে উজির নাজির সেপাই, সিংহাসন, আগত অতিথিকে স্বাগত জানায়। এছাড়াও রোমাঞ্চকর রাইডগুলোর মধ্যে দূরন্ত গতিতে ছুটে চলা শিহরণ জাগানো রাইড ক্যাবল কার। শিশুদের বিনোদন জুজু ট্রেন, পেডেল হুইল বোর্ড ও ৭০ কি.মি গতিতে চলা মোটরসাইকেল খেলা।

বিনোদন পিপাসু দর্শনার্থীদের রসনা বিলাসের জন্য এখানে রয়েছে উন্নতমানের রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফে। চমৎকার ও আকর্ষণীয় সব দেশি ও বিদেশি খাবারের সমারোহ রয়েছে এ সব রেস্টুরেন্টে। এ ছাড়া পুরো পার্কের ভেতর ছড়িয়ে রয়েছে আরও অনেক ছোট ছোট ফুড কর্নার। সেখানে পাবেন মুখরোচক সব খাবার ও ফাস্টফুড।

এত সব রাইড আর চমকপ্রদ মনোরম পরিবেশ থাকার পরও এবার ঈদে দর্শনার্থীর উপস্থিতি কম বলে জানালেন মৃত্যুকূপ রাইডের যাদু শিল্পী সুলতান মিয়া। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'গত দুই দিনে মোটরসাইকেল খেলা দেখাতে মাত্র আড়াইশ দর্শনার্থী পেয়েছি। অথচ ঈদের দিন সচরচার চার-পাঁচশ' দর্শনার্থী আসে। এবার দর্শনার্থী খুবই কম। তবে বিকালের পর শিশু-কিশোরদের পাশাপাশি অভিভাবকরা আসছেন।'

তীব্র গরমে আনন্দ নগরে এবার আনন্দের মাত্রা কম বলে জানিয়েছেন কয়েকজন দর্শনার্থী। তারা জানিয়েছেন, অসহ্য গরমে বাহিরে বের হওয়া মুশকিল। তারপরও অনেকেই আসছেন। হয়তো আরও কিছুদিন গেলে আনন্দ নগরে লোক সমাগম বাড়বে।

দিনাজপুর থেকে এই বিনোদন স্পটে ঘুরতে আসা ফরিদ, আজম ও রাকিবুল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'আনন্দ নগরের পরিবেশ ভালো। অনেকগুলো গ্রামীণ ঐতিহ্যের ভাস্কর্য রয়েছে। রাইডগুলো বেশ আনন্দদায়ক। তবে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কম হওয়াতে আনন্দে ভাটা পড়েছে।'

এদিকে আনন্দ নগর বিনোদন পার্কটি সরকারি ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ও অন্যান্য দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে। পার্কে যেতে বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক হতে পীরগঞ্জ উপজেলার ভেতর দিয়ে মদনখালী ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়ক পথে বাসে করে যাওয়ার সু-ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও পীরগঞ্জ হতে অটোরিকসা, রিকসা, থ্রি হুইলার টেম্পো, সিএনজিতে যাওয়া যায়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর