হারিয়ে যাচ্ছে পুষ্টি সমৃদ্ধ কচু শাক

রংপুর, জাতীয়

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-09-01 21:16:45

এক সময় গ্রামের মেঠোপথের দুইপাশে, কৃষি জমিতে আর বাড়ির পাশের ঝোপে জঙ্গলে কচু দেখা যেত। তখন হাটে বাজারে কচু শাক বিক্রিও হতো। কিন্তু এখন সেই চিরচেনা কচু গাছ চোখে পড়ে না।

এখন হাট-বাজারে সবজির পরসায় নেই আগের মত পুষ্টি সমৃদ্ধ কচু। মেঠোপথ ও কৃষি জমিতেও চোখে পড়ে না কচু। যেন দিন দিন কমে যাচ্ছে ভিটামিন সমৃদ্ধ এই সবজি। অথচ দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষদের খাদ্য তালিকার একটি সুপরিচিত নাম 'কচু'।

শনিবার (৮ জুন) দুপুরে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ব্রাহ্মণীকুণ্ডা বগুড়াপাড়া গ্রামে চোখে পড়েছে বেশকিছু কচু গাছ। স্থানীয়রা কচু শাক হিসেবে খেয়ে থাকেন। আবার অনেকেই কচু সংগ্রহ করে হাটে-বাজারে বিক্রিও করেন।

গ্রাম থেকে শহর, এখনো সবখানেই কচুর কদর রয়েছে। সব বয়সি মানুষের পছন্দের খাবার এটি। কচুর কাণ্ড সবজি ও পাতা শাক হিসেবে খাওয়া হয়। প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে এর কাণ্ড ও পাতাজুড়ে।

কচু শাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ডিটারেরি ফাইবার, শর্করা, বিভিন্ন খনিজ ও ভিটামিন রয়েছে। নিয়মিত কচু শাক খেলে অনেক উপকার মেলে। তবে দিন দিন কচুর চাষাবাদ কমে যাওয়ায় খাদ্য তালিকার অন্যতম এ অনুসঙ্গ সম্পর্কে আমাদের অনেক কিছুই অজানা থাকছে।

অথচ শৈশবে পাঠ্য বই থেকে জেনেছি কচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। এটি দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে। চোখ সম্পর্কিত জটিলতা কমায়। রক্তশূন্যতা দূর করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এমন নানান উপকারিতা রয়েছে কচুতে।

পুষ্টি বিজ্ঞান বলছে কচু শাকের উপকারিতা অনেক। এই শাকে যেসব উপকারিতা মিলবে তার মধ্যে-

১. কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে । এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কচু শাক খেলে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। আরেক গবেষণা বলছে, কচু শাক স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুন কার্যকরি।

২. কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এ কারণে এটি দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া চোখ সম্পর্কিত জটিলতা কমায়।

৩. কচু শাকে থাকা স্যাপোনিনস, টেনিনস, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্লাভোনয়েড উচ্চ রক্তচাপ কমায়। নিয়মিত কচু শাক খেলে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে।

৪. কচু শাক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৫. কচু শাক রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে নিয়মিত এই শাকটি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।

৬. কচু শাক হজমশক্তি বাড়াতেও ভূমিকা রাখে।

৭. অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান থাকায় কচু শাক যেকোন ধরনের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

৮. যারা রক্তস্বল্পতায় ভূগছে তারা নিয়মিত কচু শাক খেতে পারেন। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা রক্তশূন্যতা দূর করতে ভূমিকা রাখে।

পুষ্টিকর এই কচু শাক খেলে কারও কারও অ্যালার্জির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। শরীরে চুলকানিও হয়। একারণে যাদের এ ধরনের সমস্যা আছে, তাদের এই শাক খাওয়ার ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

এ সম্পর্কিত আরও খবর