'দুদক কর্মকর্তা ঘুষ নেন, প্রমাণ করতেই টাকা দিয়েছি'

ঢাকা, জাতীয়

শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 02:07:12

অবৈধভাবে সম্পদ আহরণের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে থাকা পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান দাবি করেছেন, 'স্বাধীন কমিশনের তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘুষ নেন, সেটা প্রমাণ করতেই ৪০ লাখ টাকা দিয়েছি।'

এ ঘটনায় তদন্ত চলাকালীন ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছে তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে দুদকের পরিচালক ওই তদন্তকারী কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

অন্যদিকে, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হয়ে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেয়ার বিষয়ে মিজান নিজেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

এছাড়াও ডিআইজি মিজানের এই কর্মকাণ্ড ছাড়াও তার বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বিব্রত পুলিশ সদর দফতর।

আরও পড়ুন: দুদক পরিচালক এনামুল বরখাস্ত

ডিআইজি মিজানের বিষয়ে পুলিশ সদরদফতর কী ভাবছে জানতে চাইলে, সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'বিষয়‌টি পুলিশ হেড‌কোয়ার্টার্সের দৃষ্টিতে এসেছে। এ বিষয়‌টি খতিয়ে দেখে বি‌ধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘আইনের ঊর্ধ্বে কেউই না। সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এর আগে গত বছর নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার হওয়া পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করেছিল দুদক।

সে বছরেই ৩ মে অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে মিজানকে দুদক কার্যালয়ে প্রায় ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে মিজানুর রহমান ও তার প্রথম স্ত্রী সোহেলিয়া আনারের আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ কোটি টাকারও বেশি সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। মিজানুরের নামে ৪৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৭২ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার অসঙ্গতিপূর্ণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায় বলে জানানো হয় দুদক থেকে।

চূড়ান্ত তদন্ত শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় দুদক পরিচালকের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার এই অভিযোগ পাওয়া গেল।

ঘুষ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদরদফতরে সংযুক্ত থাকা ডিআইজি মিজান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঘুষ দিয়ে আমি অপরাধ করেছি ঠিক আছে। তবে একটা স্বাধীন কমিশনের তদন্তকারী কর্মকর্তা কিভাবে ঘুষ নেন। সেটি দেখানোর জন্যই আমি তার সঙ্গে ঘুষের লেনদেনে জড়িয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। আমার কাগজপত্র ঠিক ছিল। তারপরেও কিভাবে আমাকে দ্বিতীয়বার ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটি বোঝানোর চেষ্টা করেছি।’

জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথমে ২৫ লাখ ও পরে ১৫ লাখ টাকা দিয়েছেন মিজানুর। কিন্তু ২ জুন খন্দকার এনামুল বাসির মিজানুরকে জানান, তিনি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

তবে দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারের চাপে তাকে অব্যাহতি দিতে পারেননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মিজানুর টাকা পয়সা লেনদেনের সব কথা ফাঁস করে দেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর